দেশে সংলাপের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হলেই কেবল সংলাপের প্রশ্ন আসতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। আজ শনিবার সকালে রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
সংলাপের বিষয়ে আমীর খসরু বলেন, ‘সংলাপের বিষয়টি- বাংলাদেশে যেখানে ডেমোক্রেটিক অর্ডার নেই, মানবাধিকার নেই, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রশ্নবিদ্ধ, আইনের শাসন প্রশ্নবিদ্ধ, জীবনের নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ। সংলাপ হচ্ছে ডেমোক্রেটিক অর্ডারের অংশ। যেখানে ডেমোক্রেটিক অর্ডার অ্যাবসেন্স, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড অ্যাবসেন্স, রাজনৈতিক অধিকার নেই, সাংবিধানিক অধিকার নেই, অধিকারহীন বাংলাদেশ। সে ক্ষেত্রে সংলাপের জন্য পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। তারপর তো সংলাপের প্রশ্ন আসবে।’
পর্যবেক্ষক পাঠানো নিয়ে সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘পর্যবেক্ষক পাঠানো বা না পাঠানোর সিদ্ধান্ত তাদের। এর জবাব তো আমরা দিতে পারব না, সেটা তারা উত্তর দিতে পারবে। ’ তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে তো নির্বাচন হতে হবে? পর্যবেক্ষক পাঠানোর প্রশ্ন তখনই আসে যখন একটা দেশে নির্বাচন হয়। এই মুহুর্ত পর্যন্ত বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন দেশের জনগণ, গণতান্ত্রিক বিশ্বের জনগণ কেউ বিশ্বাস করে না।’
বাংলাদেশের বিগত নির্বাচনে জনগণ ভোট দিয়ে আজ সরকার গঠন করেছে উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, ‘আগামীতে তো বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই। এই প্রেক্ষাপটে যে সিদ্ধান্ত তারা দেবে সেটা তাদের ব্যাপার।’
ইইউ প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে আসার উদ্দেশ্যটা তো পরিষ্কার করেছে বাংলাদেশে নির্বাচন হয় না, জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য। তিনি বলেন, ‘তারা তো নেপাল, ভুটান, পাকিস্তান, ভারত ও শ্রীলংকা কোথাও যাচ্ছে না। কেন বাংলাদেশে আসছে? আসলে আগামী নির্বাচন বাংলাদেশে যে হবে না-এর আলামত তো প্রতিদিন দেখতেছি।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, ‘এই ইইউ প্রতিনিধিদলের দায়িত্ব হচ্ছে বাংলাদেশের নির্বাচনের প্রেক্ষাপট পর্যবেক্ষণ করে ফিরে গিয়ে তারা প্রতিবেদন দেবে।’
এ সময় মার্কিন প্রতিনিধিদলের বাংলাদেশ সফর প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি কেন বাংলাদেশে সবাই সফর করছে। তারা যখন বক্তব্য শুরু করে তখন তারা কী বলে, তারা বলে বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহনমূলক এবং গ্রহণযোগ্য একটা নির্বাচন দেখতে চান। এখান থেকে ধরে নেন, বাংলাদেশ সম্পর্কে তাদের কী ধারণা এবং বাংলাদেশে তারা কী চায়। এখান থেকেই ধারণা করে নিতে পারেন, আর তো কিছু লাগে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহনমূলক এবং গ্রহণযোগ্য একটা নির্বাচন দেখতে চায়, মানবাধিকার চায়, শ্রমিকের আইন সঠিকভাবে হচ্ছে কি না, তা দেখতে চায়। এর চেয়ে ডিপ্লোমেটিক অ্যাঙ্গেলে এর চেয়ে বেশি কিছু বলা আছে?’
বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটি সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিল সদস্য মো. ইসমাইল জবিউল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আসাদ উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে, রিকার্ডো চেলারির নেতৃত্বে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলে ছিলেন ছয়জন।