৩৩২ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে এক পর্যায়ে ৭২ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। দল যখন একশর নিচে অলআউট হওয়ার শঙ্কায় তখন একপ্রান্তে মাটি কামড়ে পড়ে থাকেন ছয়ে নামা মুশফিকুর রহিম। শেষ পর্যন্ত তার ৬৯ রানেই ১৮৯ রান তুলতে পারে বাংলাদেশ। হার দেখতে হয় ১৪২ রানের। সিরিজের প্রথম ম্যাচের পর আজ শনিবার দ্বিতীয় ম্যাচেও হেরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো ওয়ানডেতে সিরিজ খোয়াল বাংলাদেশ।
৩৩২ রান তাড়া করে জয় পেতে রেকর্ড গড়তে হতো বাংলাদেশকে। এর আগে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ ৩২২ রান তাড়া করে জিততে পেরেছে। ২০১৯ বিশ্বকাপে টন্টনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এই রান তাড়া করে জয় পায় টাইগাররা। দেশের মাঠে সর্বোচ্চ ৩০৮ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড আছে বাংলাদেশের। ২০১৩ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এই জয় পায় বাংলাদেশ। তবে এই জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে সর্বোচ্চ ২৮৭ রান তাড়া করে জয় পাওয়ার ইতিহাস আছে।
বিশাল এই রান তাড়ায় শুরুটা একদমই ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। পঞ্চম ওভারের প্রথম বলে ফেরেন লিটন। পেসার ফজলহক ফারকীর বলে সজোরে ব্যাট চালালে টপ এজ হয়ে ক্যাচ উঠে যায়। তালুবন্দী করতে কোনো ভুল করেননি মোহাম্মদ নবী। তার পরের ওভারেই ফেরেন ওয়ান ডাউনে ব্যাট করতে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত। মুজিবের বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন নাজমুল। নবম ওভারের প্রথম বলে ফারকীর বলে বোল্ড হন নাইম শেখও। ২১ বলে মাত্র ৯ রান করেন তিনি।
২৫ রানে ৩ উইকেট হারানো বাংলাদেশের হাল ধরেন সাকিব ও তাওহীদ হৃদয়। ৬৫ রান পর্যন্ত দলেকে টেনে নিয়ে যান এই জুটি। তবে এরপর আবার মড়ক শুরু হয়। একে একে বিদায় নেন হৃদয়, সাকিব ও আফিফ হোসেন। ৭২ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে দল যখন একশর নিচে অলআউট হওয়ার শঙ্কায় তখন হাল ধরেন মুশফিক ও মিরাজ। এই জুটি দলকে নিয়ে যান ১৫৯ রান পর্যন্ত। এই রানে মিরাজ ফিরলে ভাঙে ৮৭ রানের জুটি। দলের সঙ্গে আর ১০ রান যোগ হতে ফেরেন হাসান মাহমুদও। আর নবম উইকেটে মোস্তাফিজুর রহমানকে নিয়ে ২০ রানের জুটি গড়ে আউট হন মুশফিক। ৮৫ বলে ৬৯ রান করেন তিনি। ইবাদত হোসেন চোটের কারণে বাংলাদেশের বোলিং ইনিংসের সময়ই মাঠ ছাড়েন পরবর্তীতে আর ব্যাট না করায় ১৮৯ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস।
এর আগে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয়টিতে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দুই আফগান ওপেনারের কাছে নাস্তানাবুদ হয়েছে বাংলাদেশ দল। ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৩১ রান তোলার পথে উদ্বোধনী জুটিতে রেকর্ড ২৫৬ রান তোলে আফগানরা।
২৫৬ রানের মাথায় সাকিব আল হাসানের বলে গুরবাজের পতনের পর অবশ্য ম্যাচের লাগাম টেনে ধরে বাংলাদেশ। ২৫৯ রানের মাথায় মোস্তাফিজুর রহমান রহমত শাহকে ফেরানোর পর ২৬৬ রানে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে ফেরেন হাশমতউল্লাহ শাহিদিও। ২৮৬ রানের মাথায় নাজিবুল্লাহ জাদরানকেও ফেরান মিরাজ। আর সেঞ্চুরির পরপরই ২৯৯ রানের মাথায় ইব্রাহিমকে ফেরান মোস্তাফিজ। ৩০৬ রানের মাথায় সাকিবের বলে স্টাম্পিংয়ের শিকার হন রশিদ খান। ৩১৮ রানের মাথায় আজমাতুল্লাহ ওমারজাইকে ফেরান মোস্তাফিজ। আর শেষ ওভারে অষ্টম ব্যাটার হিসেবে হাসান মাহমুদের শিকার হন মুজিব উর রহমান। শেষ ওভারের শেষ বলে ফারুকিকেও ফেরান হাসান।
বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে সফল বোলার সাকিব আল হাসান। ১০ ওভারে ৫০ রানের বিনিময়ে এই বাহাতি স্পিনারের শিকার ২ উইকেট। ১০ ওভারে ৬০ রান দিয়ে সাকিবের সমান ২ উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজও। ২ উইকেট নিলেও ৯ ওভারে ৬০ রান নিয়েছেন মিরাজ।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে এটিই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় হার। এর আগে ২০১৮ সালের এশিয়া কাপে আফগানদের বিপক্ষে ১৩৬ রানে হারে টাইগাররা।