ঢাকা: তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সাংবাদিক নাজেহালের ঘটনা স্বীকার করে তা তদন্তের ঘোষণা দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কিন্তু তদন্তে কোনো প্রমাণই পেল না সংস্থাটি।
গত ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ও ঢাকা সিটি করপোরেশন (ডিসিসি) উত্তর ও দক্ষিণের নির্বাচনে সাংবাদিকদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশে বাধা দেয় পুলিশ।
এছাড়া কোন কোন কেন্দ্রে সাংবাদিকদের ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে তাদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিতও করা হয়।
ওই দিন সকাল ১১টা পর্যন্ত এমন নাজেহালের ঘটনা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হলে বিকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ তা স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, বিষয়টি জানার সাথে সাথে পুলিশকে পর্যবেক্ষক নীতিমালা পড়ে শুনিয়েছি এবং সাংবাদিকদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ নিশ্চিত করেছি।
এরপর সাংবাদিক নাজেহালের ঘটনায় পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করে ইসি। ডিসিসি এবং চসিকের জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট পৃথক তদন্ত কমিটিকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলে ইসি।
কমিটি সংশ্লিষ্ট ভোটকেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, পুলিশ কর্মকর্তা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের শুনানি করে। এতে সবাই সাংবাদিক নাজেহালের ঘটনা অস্বীকার করেন।
ডিসিসি এর তদন্ত কমিটি পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে অন্যদের মুখোমুখি শুনানির ব্যবস্থাও করেন।
পুরো তদন্ত কার্যক্রম শেষে চসিক নির্বাচনের তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব ও ইসির উপ-সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান রোববার (০৫ জুলাই) ২৮০ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন ইসি সচিব সিরাজুল ইসলামের কাছে জমা দিয়েছেন।
এর আগে ডিসিসি-এর তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ঢাকা অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. আনিছুর রহমান ৩৪০ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। দুটি প্রতিবেদনেই সাংবাদিক নাজেহালের ঘটনায় কাউকে দায়ী করা যায়নি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ডিসিসি এর প্রতিবেদনে বলা হয়, যথাযথ ও পর্যাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণের মাধ্যমে অভিযোগ সমর্থিত না হওয়ায় সাংবাদিকদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশে বাধা অথবা নাজেহালের ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা যায়নি।
এদিকে চসিক নির্বাচনের তদন্ত কমিটির দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানান, প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। তবে কাউকে চিহ্নিত করা যায়নি।
অন্যদিকে প্রতিবেদনে তদন্ত কমিটি বেশ কিছু সুপারিশ দিয়েছে। এতে ভবিষতে সাংবাদিকদের জন্য স্বতন্ত্র পর্যবেক্ষণ নীতিমালা প্রণয়নের কথা বলা হয়েছে।
একই সঙ্গে ইসির দেওয়া সাংবাদিক কার্ডে আরও সুস্পষ্ট নির্দেশনা লেখার সুপারিশও করেছে কমিটি।
এ বিষয়ে ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম বলেন, দুই সিটির জন্য গঠিত দুটি তদন্ত কমিটি প্রায় দুই মাস ধরে তদন্তের পর প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এটি এখন বিবেচনার জন্য কমিশনের কাছে উপস্থাপন করা হবে। কমিশনই এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।