সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংক (সুইস ব্যাংক) থেকে বাংলাদেশি আমানতের পরিমাণ কমেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশি ব্যাংকগুলোর আমানত কমেছে এবং বাংলাদেশি ব্যক্তি আমানত বেড়েছে। সব মিলিয়ে গত বছরে সুইস ব্যাংকগুলোতে প্রায় ১০ হাজার ১১৭ কোটি টাকার বাংলাদেশি আমানত কমেছে।
সুইস ব্যাংকে ব্যাংলাদেশিদের আমানত দুইভাবে দেখানো হয়। প্রথমত দেশটির ব্যাংকগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর লেনদেন এবং দ্বিতীয়ত গ্রাহক আমানত।
গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদনে জানা গেছে, ২০২১ সালে বাংলাদেশি গ্রাহকের আমানত ছিল ২ কোটি ৬০ লাখ ফ্রাঁ। ২০২২ সালে তা বেড়ে ৩ কোটি ৬০ লাখে উন্নীত হয়েছে। অন্যদিকে ২০২১ সালে বাংলাদেশি ব্যাংকগুলোর
আমানত ছিল ৮৪ কোটি ৪০ লাখ ফ্রাঁ। ২০২২ সালে তা কমে ১ কোটি ৯০ লাখ ফ্রাঁতে নেমে এসেছে। এর মানে হলো- গ্রাহকের আমানত বাড়লেও ব্যাংকিং খাতের আমানত কমে এসেছে।
অর্থনীতিবিদরা
বলছেন, অনিশ্চয়তার কারণে বিত্তবানরা দেশকে নিরাপদ মনে করছেন না। ফলে বিভিন্ন উপায়ে অর্থপাচার হচ্ছে। সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশের গ্রাহক আমানত বাড়ার এটি একটি কারণ হতে পারে। তারা বলেন, ঋণের নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের টাকা, বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ এবং ঘুষ-দুর্নীতির টাকা দেশ থেকে পাচার হয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশিদের আমানত : ২০২২ সালে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের আমানতের স্থিতি ৫ কোটি ৫২ লাখ ফ্রাঁ। আগের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে যা ছিল ৮৭ কোটি ১১ লাখ ফ্রাঁ। এর আগে ২০২০ সালে ৫৬ কোটি ২৯ লাখ, ২০১৯ সালে ৬০ কোটি ৩০ লাখ, ২০১৮ সালে ৬১ কোটি ৭৭ লাখ এবং ২০১৭ সালে ছিল ৪৮ কোটি ১৩ লাখ ফ্রাঁ।
প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সুইস ব্যাংকে আমানত রাখার দিক থেকে এ বছর প্রথম অবস্থানে যুক্তরাজ্য। ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্র ১৩ হাজার ১০৯ কোটি ফ্রাঁ, সিঙ্গাপুর ৪ হাজার ৭৮৭ কোটি, চীন ১ হাজার কোটি, রাশিয়া ১ হাজার ৫২৫ কোটি, সৌদি আরব ৫২১ কোটি, ভারত ৩৪০ কোটি, পাকিস্তান ৩৮ কোটি, জাপান ১ হাজার ৩৪২ কোটি ও নেপালের ৪৮ কোটি সুইস ফ্রাঁ আমানত রয়েছে।