দুই সিটিতে ভোটগ্রহণ শুরু

Slider খুলনা বরিশাল


খুলনা ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। সোমবার (১২ জুন) সকাল ৮টা থেকে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খুলনা সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন ও বরিশাল সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির।

এদিকে, দুই সিটিতে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সিসিটিভির মাধ্যমে কেন্দ্রীয়ভাবে নির্বাচনের কার্যক্রম মনিটর করা হচ্ছে। প্রতিটি কেন্দ্র ও ভোট কক্ষে স্থাপন করা হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। ইতোমধ্যে ভোটের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ করতে বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মাঠে নামানো হয়েছে। মাঠে আরও রয়েছেন নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটরা। এর মধ্যে খুলনায় ১১ প্লাটুন বিজিবিসহ সাড়ে আট হাজার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি বরিশালে ১০ প্লাটুন বিজিবি, ৩০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং ১০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন।

আমরা সুষ্ঠু ভোট করার জন্য বদ্ধপরিকর উল্লেখ করে খুলনা সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্কুলার অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে। প্রত্যেকটি কেন্দ্রেই পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ, আনসার, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছেন। খুলনা মেট্রো পুলিশ, জেলা প্রশাসন, পুলিশের কর্মকর্তারা সতর্ক আছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন জায়গায় চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। যাতে কোনও ধরনের অপ্রীতিকার ঘটনা না ঘটে। আমি আশাবাদী, একটি ভালো নির্বাচন হবে।’

খুলনার জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন বলেন, ‘নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। বিজিবির টহল টিমের সঙ্গে ১১ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছেন।’

সুন্দর পরিবেশের মধ্য দিয়ে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে জানিয়ে বরিশাল সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আশা করছি, সুন্দর পরিবেশে ভোটাররা ভোট দিতে পারবেন। সেইসঙ্গে অবাধ ও সুষ্ঠু একটি নির্বাচন উপহার দিতে পারবো আমরা।’

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘কোথাও কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

খুলনা সিটির নির্বাচনি তথ্য

খুলনায় ভোটার সংখ্যা ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮৩৩ জন এবং নারী ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৬ জন।

এই সিটিতে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পাঁচ জন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের তালুকদার আব্দুল খালেক, জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের শফিকুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলনের হাতপাখা প্রতীকের আব্দুল আউয়াল, জাকের পার্টির গোলাপফুল প্রতীকের এসএম সাব্বির হোসেন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী দেয়ালঘড়ি প্রতীকের এসএম শফিকুর রহমান মুশফিক।

এ ছাড়া ৩১টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১৩৬ জন ও ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৩৯ জন কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। যার মধ্যে নগরীর ১৩ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে দুই জন কাউন্সিলর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

রিটার্নিং কর্মকর্তার দেওয়া তথ্যমতে, খুলনার প্রতিটি ভোটকক্ষে একটি ও কেন্দ্রের সুবিধাজনক স্থানে দুটি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। ভোটকেন্দ্রগুলো মোট ২ হাজার ৩১০টি ক্যামেরার আওতায় রয়েছে।

খুলনা সিটির নির্বাচনি তথ্য

বরিশালে ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৭৬ হাজার ২৯৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৮৯ জন এবং নারী ১ লাখ ৩৮ হাজার ৮০৯ জন।

এই নির্বাচনে সাত জন মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত (নৌকা), জাতীয় পার্টির ইকবাল হোসেন তাপস (লাঙ্গল), বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনের মুফতি ফয়জুল করিম (হাতপাখা), জাকের পার্টির মিজানুর রহমান বাচ্চু (গোলাপ ফুল), স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. কামরুল আহসান (টেবিল ঘড়ি), মো. আলী হোসেন হাওলাদার (হরিণ) এবং মো. আসাদুজ্জামান (হাতি)।

পাশাপাশি সিটির ৩০টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১১৯ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরের ১০টি পদের বিপরীতে ৪২ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন।

ইসির তথ্যমতে, নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডের ১২৬টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলছে। মোট ভোটকক্ষ ৮৯৪টি। প্রতিটি সাধারণ কেন্দ্রে ১৬ জন এবং প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৭ জন সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *