আর্থিক লেনদেনের চিরকুটে এডিসি মিল্টনের নাম

Slider বিচিত্র


র‌্যাব হেফাজতে মারা যাওয়া নওগাঁ পৌরসভার চন্ডিপুর ভূমি অফিসের অফিস সহায়ক সুলতানা জেসমিনের হাতে লেখা ৪৬টি চিরকুট পাওয়ার কথা জানিয়েছেন তার স্বজনরা। সেই চিরকুটের একটিতে নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি, রাজস্ব) মিল্টন চন্দ্র রায়ের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের তথ্য লেখা আছে বলে দাবি করা হয়েছে।

তবে মিল্টন চন্দ্র রায় বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি সুলতানা জেসমিনকে চেনেন না বলেও দাবি করেন।

গত ২৯ মে নওগাঁ সার্কিট হাউসে সুলতানা জেসমিনের ছেলে শাহেদ শাহরিয়ার সৈকত, ভাই সুলতান মাহমুদ হোসেন ও মামা এ কে এম নাজমুল হক মন্টুর জবানবন্দি গ্রহণ করেন উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটির সদস্যরা। এ সময় কমিটির আহ্বায়ক মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের সমন্বয়ক ও সংস্কার সচিব মাহমুদুল হোসাইন খানসহ অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে ৪৬টি চিরকুট তদন্ত কমিটির কাছে হস্তান্তর করেন তারা।

সুলতানা জেসমিনের মামা নওগাঁ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর এ কে এম নাজমুল হক মন্টু দাবি করেন, তার ভাগ্নির বাসার আসবাবপত্র সরাতে গেলে ৪৬টি চিরকুট পাওয়া যায়। সেই চিরকুটগুলোতে বেশ কয়েকটি মোবাইল নম্বরে টাকা পাঠানো কথা লেখা আছে। এর মধ্যে একটিতে এডিসি মিল্টনের নাম, মোবাইল নম্বর, অঙ্কে ও কথায় ৫০ হাজার টাকা ও ০৫/০১/২০২৩ তারিখ (বৃহস্পতিবার) লেখা আছে। চিরকুটগুলো তদন্ত কমিটির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

২৯ মে স্বজনদের জবানবন্দি গ্রহণ শেষে কমিটির আহ্বায়ক মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের সচিব মাহমুদুল হোসাইন খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘খুঁটিনাটিসব বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে তদন্ত করছি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই প্রতিবেদন দেওয়ার চেষ্টা করছি।’

এ বিষয়ে মিল্টন চন্দ্র রায় সাংবাদিকদের জানান, বিষয়টি তার জানা নেই। সুলতানা জেসমিনকে তিনি চিনতেন না। এমনটি তার পরিবারের কারো সঙ্গে কোনো সম্পর্ক ছিল না বলেও দাবি করেন এডিসি মিল্টন।

জয়পুরহাট র‌্যাব ক্যাম্পের একটি দল ২২ মার্চ সকালে সুলতানা জেসমিনকে আটক করে। স্থানীয় সরকারের রাজশাহী বিভাগের পরিচালক মো. এনামুল হকের মৌখিক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে আটক করা হয়। এনামুল হকের অভিযোগ, জেসমিন ও আল আমিন নামের এক ব্যক্তি তার (এনামুল হকের) ফেসবুক আইডি হ্যাক করে বিভিন্ন জনকে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখাচ্ছিলেন। এভাবে তারা প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলেন।

আটকের পর ২৪ মার্চ সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুলতানা জেসমিন মারা যান। তার মৃত্যুর পর রাজশাহীর রাজপাড়া থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যুগ্ম সচিব এনামুল হকের করা একটি মামলার কথা জানা যায়, যেটি রেকর্ড করা হয় ২৩ মার্চ বিকেলে। সুলতানা জেসমিন ও তার কথিত সহযোগী আল-আমিনকে এতে আসামি করা হয়। আল-আমিনকে ২৬ মার্চ ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তিনি একজন মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্ট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *