ডিজিটাল বাংলাদেশ পেরিয়ে অগ্রযাত্রা স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটেও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বাজেটের মূল প্রতিপাদ্য ‘উন্নয়নের অভিযাত্রার দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা।’ আর বাজেটের দর্শন হচ্ছে, ২০৪১ সালের মধ্যে একটি সুখী সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা। স্মার্ট বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় হবে কমপক্ষে ১২ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার।
গতকাল বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, স্বপ্নের সেই স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হবে চারটি মূল স্তম্ভ- স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট সোসাইটি ও স্মার্ট ইকোনমির ওপর ভিত্তি করে। স্মার্ট বাংলাদেশে দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকবে ৩ শতাংশের কম মানুষ আর চরম দারিদ্র্য নেমে আসবে শূন্যের কোঠায়। মূল্যস্ফীতি ৪ থেকে ৫ শতাংশের মধ্যে থাকবে। বাজেট ঘাটতি থাকবে জিডিপির ৫ শতাংশের নিচে এবং রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত হবে ২০ শতাংশের ওপর। এ ছাড়া বিনিয়োগ হবে জিডিপির ৪০ শতাংশ। স্মার্ট বাংলাদেশের ব্যাপারে জানা গেছে, শতভাগ ডিজিটাল অর্থনীতি আর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিভিত্তিক সাক্ষরতা অর্জিত হবে। স্বয়ংক্রিয় যোগাযোগ ব্যবস্থা, টেকসই নগরায়ণসহ নাগরিকদের প্রয়োজনীয় সব সেবা থাকবে হাতের নাগালে। তৈরি হবে পেপারলেস ও ক্যাশলেস সোসাইটি। সবচেয়ে বড় কথা, স্মার্ট বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হবে সাম্য ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজব্যবস্থা।
স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে যুবসমাজকে প্রস্তুত করতে গবেষণা, উদ্ভাবন ও উন্নয়নমূলক কাজে বাজেটে ১০০ কোটি টাকা বিশেষ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা ও উদ্ভাবন সেন্টারের মাধ্যমে ৮০ হাজার তরুণ-তরুণীকে অগ্রসর প্রযুক্তি (অ্যাডভান্স টেকনোলজি) ও উদ্ভাবনী বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। স্মার্ট নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ২০২৬ সালের মধ্যে ২০ হাজার তরুণ-তরুণীকে অগ্রসর প্রযুক্তিতে প্রশিক্ষণের কাজ চলছে।
স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনকে গুরুত্ব দিয়ে প্রস্তাবিত বাজেটে বলা হয়েছে, প্রথাগত কর্মসংস্থানের ধারণা থেকে বেরিয়ে তরুণ সমাজ যেন উদ্ভাবনী ও সমাজ পরিবর্তনে নেতৃত্ব দিতে পারে, সে ধরনের প্রণোদনার সঞ্চার করতে চায় সরকার। অনুকূল প্ল্যাটফর্মও করে দেবে সরকার। উদীয়মান স্টার্টআপে সহযোগিতা দেওয়ার জন্য সরকার স্টার্ট-আপ বাংলাদেশ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানি গঠন করেছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশের জনগণকে স্বচ্ছতার সঙ্গে ও সহজে সেবা দেওয়া নিশ্চিত হবে ‘স্মার্ট গভর্নমেন্ট’-এর মাধ্যমে। এ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের উপযোগী প্রতিষ্ঠান যেমন: ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার তৈরি এবং সেবা দেওয়ার পদ্ধতি যেমনÑ তথ্য বাতায়ন পোর্টাল, মাইগভ প্ল্যাটফর্ম, ই-নথি, ই-নামজারি, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ইত্যাদি উদ্ভাবন ও প্রয়োগ করছি আমরা। স্মার্ট গভর্নমেন্টের আওতায় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সব কাজে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে জনগণকে দ্রুততম সময়ে সর্বোত্তম সেবা দেবেন।