ঢাকা: দেশে দারিদ্র্যের হার ২২ দশমিক ৭ শতাংশে নেমে এসেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত মধ্য আয়ের দেশ গড়ার যে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে, তা পূরণ হওয়া আর বেশি দূরে নয়।সবাই একসঙ্গে কাজ করলে সহজে এই লক্ষ্য বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।
বুধবার (১ জুলাই) দুপুরে প্রধানমন্ত্রী তার কার্যালয়ে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছয়টি দফতর ও সংস্থার সঙ্গে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এগুলো হলো- বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেপজা), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা), এনজিও বিষয়ক ব্যুরো, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ অফিস, বিনিয়োগ বোর্ড ও আশ্রয়ন প্রকল্প।
প্রজাতন্ত্রের সকল কর্মকর্তা- কর্মচারীকে আন্তরিকভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত মধ্য আয়ের দেশ গড়ার যে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি, তা পূরণ হতে আর বেশি দূর নয়। সবাই একসঙ্গে কাজ করে সে লক্ষ্যে পৌঁছাবো। আমাদের সবার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দেশ সফলতার উচ্চ শিখরে পৌঁছাবে।
২০২১ সালের মধ্যে মধ্য আয়ের দেশ আর ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে সবাইকে আন্তরিক হতে হবে, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আমরা আওয়ামী লীগ সরকার ব্যবসা করতে ক্ষমতায় আসিনি। আমরা দেশ স্বাধীন করেছি, এখন দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। আমরা আর ভিক্ষার ঝুড়ি নিয়ে ঘুরতে চাই না। স্বনির্ভর জাতি হিসেবে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চাই।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা পারি, আর তা আমরা প্রমাণ করেছি। দারিদ্রের হার ২২.৭ ভাগে নেমে এসেছে, আরেকটু কষ্ট করলে আমরা দারিদ্র্য আরও কমিয়ে আনতে পারবো।
বর্তমান সরকারের অন্যতম অঙ্গীকার সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা, গণতন্ত্রকে সুসংগঠিত করা, এই মত দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রজাতন্ত্রের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই অঙ্গীকার বাস্তবায়নে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭২ সালের ১ ফেব্রুয়ারির একটি বক্তৃতা থেকে উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির জনক ডাক দিয়েছিলেন সরকারি কর্মচারীদের জনগণের সেবায় নিজেদের উৎসর্গ করতে হবে। জাতির স্বার্থকে সব কিছুর উর্ধ্বে স্থান দিতে হবে।
রূপকল্প ২০২১ ও রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে সুখী সম্মৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সংস্থাগুলোর বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির বিভিন্ন দিক প্রধানমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরা হয়।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আবুল কালাম আজাদ তার উপস্থাপনায় দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করেন, ‘এই কর্ম পরিকল্পনার বাস্তবায়ন আমরা করবোই’।
আর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সচিব সুরাইয়া বেগম অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন, চুক্তির বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সবাই আন্তরিক হয়ে কাজ করবে।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত এই সংস্থাগুলোর সঙ্গে এটি দ্বিতীয় চুক্তি স্বাক্ষর। এর আগে ২০১৪ সালের ৩০ জুন পাঁচটি সংস্থা চুক্তিবদ্ধ হয়। এবার আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এই চুক্তির তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হলো।