মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিট্যান্স প্রবাব বৃদ্ধি পাওয়ায় সন্দেহ করছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। তাদের সন্দেহ রেমিট্যান্সের আড়ালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরছে পাচার হওয়া অর্থ। আজ শনিবার ধানমন্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশ অর্থনীতি ২০২২-২৩: তৃতীয় অন্তর্বর্তীকালীন পর্যালোচনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় রেমিট্যান্সের এ চিত্র তুলে ধরেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।
আলোচনা সভায় জানানো হয়, এতদিন ধরে দেশে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আসছিল সৌদি আরব থেকে। হঠাৎ করে দেশে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আসা শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। চলতি বছরের জুলাই-এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ৩ দশমিক ০৫ বিলিয়ন ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ২ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন ডলার।
অন্যদিকে, গত অর্থবছরের ১০ মাসে (জুলাই- এপ্রিল) সৌদি আরব থেকে ৩ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স আসলেও চলতি অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স কমে আসে ৩ দশমিক ০৪ বিলিয়ন ডলার। যুক্তরাষ্ট্র থেকে সৌদি আরবের চেয়েও বেশি রেমিট্যান্স আসায় সন্দেহ করছে সিপিডি।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘এটি একেবারেই অস্বাভাবিক, কখনোই হয় না। কারণ আমরা জানি আমাদের বেশিরভাগ রেমিট্যান্স কোথা থেকে আসে। গত ১০ মাসে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ৯ দশমিক২২ লাখ মানুষ গেছে। সেখান থেকে প্রত্যাশা মতো রেমিট্যান্স আসছে না। লোক যাওয়া ও রেমিট্যান্সের মধ্যে মিসম্যাচ হচ্ছে। সৌদি থেকে বেশি রেমিট্যান্স আসলেও যুক্তরাষ্ট্র সেই জায়গাটা দখল করেছে।’
আলোচনা সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন
প্রশ্ন রেখে ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে যারা যায় তাদের বেশিভাগই হোয়াইট কালার জব করে। অনেকেই ঘর বাড়ি জমি জমা বিক্রি করে দেশ থেকে টাকা নিয়ে চলে যায়। অনেক শিক্ষার্থীও আছে। তারা তো আর টাকা পাঠাতে পারে না। তাহলে এই টাকা কোথা থেকে আসছে?’
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘এর একটা সম্ভাব্য ব্যাখ্যা হতে পারে, যেখান থেকে টাকাটা পাচার হয়ে গেছে সেই টাকাটা আবার ফেরত আসছে। রেমিট্যান্সের ওপর যে আড়াই শতাংশ ইনসেন্টিভ বা সাবসিডি দেওয়া হচ্ছে সেটার সু্যোগ নেওয়া হচ্ছে। কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি গভীরভাবে গিয়ে অনুসন্ধান করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’