উপকূলীয় জেলা কক্সবাজারের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’। এতে জেলার প্রায় ১০ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে শুধু টেকনাফের সেন্টামার্টিনেই ১ হাজার ২০০ ঘরবাড়ি ক্ষতির মুখে পড়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোথাও প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি।
অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে দুর্বল হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এতে করে বিপদের শঙ্কা অনেকটাই কেটে গেছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের প্রধান আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান।
আজ রোববার আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে সামান্য দুর্বল হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র আজ বিকেলে কক্সবাজার ও উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করে মিয়ানমারের স্থলভাগের ওপর অবস্থান করছে। সম্পূর্ণ ঘূর্ণিঝড়টি সন্ধ্যা নাগাদ উপকূল অতিক্রম করে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে পারে।
মোখার প্রভাবে বাংলাদেশে নিহতের খবর না পাওয়া গেলেও মিয়ানমারে এখন পর্যন্ত তিনজনের প্রাণহানি হয়েছে। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইতোমধ্যে দেশটির বিভিন্ন জায়গা থেকে ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যাচ্ছে। এতে এখন পর্যন্ত তিনজনের প্রাণহানি হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের প্রধান আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করে গতিপথ বদলে মিয়ানমারের দিকে চলে গেছে ঘূর্ণিঝড়টি। এখন ভয়ের কিছু নেই, এটি কিছুটা দুর্বল হয়ে গেছে। আগামী তিন ঘণ্টা উপকূলজুড়ে আঘাতের প্রভাবে ঝড়বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। সন্ধ্যা ৬টার দিকে প্রভাব কমে এটি পুরোপুরি দুর্বল হয়ে যাবে। এখন শেষ অংশের প্রভাব চলছে। উপকূলে জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা নেই।’
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. শাহীন ইমরান বলেন, মোখার তাণ্ডব সন্ধ্যা ৭টার পর পুরোদমে শিথিল হয়ে যাবে। সিগন্যাল কমে এলে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা আড়াই লাখ মানুষ ঘরে ফিরতে পারবেন।
নৌবাহিনীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী উদ্ধার তৎপরতা এবং প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী নিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য নৌবাহিনীর সদস্যরা প্রস্তুত রয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে নৌবাহিনীর ২১টি জাহাজ, হেলিকপ্টার ও পেট্রোল এয়ারক্রাফট।