ঘূর্ণিঝড় মোখা থেকে রক্ষার জন্য উপকূলীয় এলাকা সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্রায় ৯ হাজার বাসিন্দাকে আশ্রয়কেন্দ্রে এনেছে উপজেলা প্রশাসন। তাদের সেন্টমার্টিনের ৩৭টি আশ্রয়কেন্দ্র অর্থাৎ হোটেল-মোটেল ও বিভিন্ন স্থানে রাখা হয়েছে। কিন্তু সেখানে নিরাপদ মনে করছেন না তারা। এ অবস্থায় টেকনাফে আসার আকুতি জানিয়েছেন দ্বীপের বাসিন্দারা।
তবে উপজেলা প্রশাসন বলছে, সাগর উত্তাল থাকার কারণে নৌযান চলাচল না করায় তাদেরকে সেখান থেকে নিয়ে আসা সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থায় আনা ঝুঁকিপূর্ণ। যেসব আশ্রয়কেন্দ্রে তাদের রাখা হয়েছে, সেগুলো অনেকটাই নিরাপদ। তবে ঝুঁকিপূর্ণ, এটাও সত্য।
শনিবার (১৩ মে) রাত ১১টা পর্যন্ত সেন্টমার্টিনের প্রায় ৯ হাজার বাসিন্দাকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, হোটেল-মোটেলসহ বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফের ইউএনও মো. কামরুজ্জামান।
তিনি বলেন, দ্বীপে বসবাসকারীদের সেখানকার হাসপাতাল, হোটেল-মোটেলসহ আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে। সেন্টমার্টিন ও টেকনাফ মিলে প্রায় ২৭ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন।
রাতে দ্বীপের বাসিন্দা জয়নাল আবেদিন আকুতি জানিয়ে বলেন, ‘সাগরে বুকে কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। আমরা সবাই মৃত্যুর ভয়ে আছি। সরকারের কাছে দ্বীপের বাসিন্দাদের চাওয়া, বিশেষ ব্যবস্থায়ও যেন সবাইকে টেকনাফে নিয়ে যাওয়া হয়। অন্যথায় সবার লাশ নিতে হবে।’
তার মতো দ্বীপের অনেক বাসিন্দা জানিয়েছেন, তারা টেকনাফে আসতে চান। সেখানকার আশ্রয়কেন্দ্রের অবস্থা নড়বড়ে। ঝড়ের যে তীব্রতা থাকবে, তাতে নিরাপদে থাকা যাবে না।
সেন্টমার্টিন দ্বীপের ইউপি সদস্য মো. খোরশেদ আলম বলেন, ‘জোয়ারের সঙ্গে বঙ্গোপসাগরে পানি অনেক বেড়েছে। সবাইকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে। তবে ভয়ে অনেকে টেকনাফে যেতে চান।’
দ্বীপের আরেক বাসিন্দা আবদুল আজিজ বলেন, ‘সকাল থেকে দ্বীপে বাতাসের গতি বেড়েছে। ঘূর্ণিঝড় এলে দ্বীপের বাসিন্দাদের নির্ঘুম রাত কাটে। সাগরের পাড়ে আশ্রয়কেন্দ্র। দ্বীপের অবস্থা খারাপ। আতঙ্কে আছি।’
তাদের ফিরিয়ে আনা হবে কি না জানতে চাইলে ইউএনও বলেন, ‘উত্তাল সাগর পাড়ি দিয়ে আনা সম্ভব না। প্রশাসন থেকে এটা মানতে চাইবে না। গতকাল থেকে বিভিন্ন স্পিডবোট ও নৌকাগুলো চলাচল করছিল। তাদেরকে বাধা দেওয়া হয়নি। তবে বোট মালিকদেরই লোকজন প্রশাসনকে জানিয়েছেন, সাগরের যে অবস্থা তাতে চলাচল উপযোগী নয়। সাগর উত্তাল আছে। তাই স্থানীয় বাসিন্দারা আশ্রয়কেন্দ্রে নিরাপদে থাকবেন।’
এদিকে, আজ আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, ঝড়ের অগ্রভাগ প্রথমে আঘাত হানবে সেন্টমার্টিন দ্বীপে। এই দ্বীপে ৮ থেকে ১২ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।