মা।
একটি ছোট্ট শব্দ। অথচ এই শব্দের মধ্যে যে ব্যাপকতা রয়েছে খোলা আকাশের সাধ্যি নেই তা ধারণ করার। অপরিসীম আদর-মমতা, নিখাদ স্নেহ-ভালোবাসা, নিঃস্বার্থ ত্যাগ-তিতিক্ষার এক অতুলনীয় ও অনন্য দৃষ্টান্ত ‘মা’। পৃথিবীতে মায়ের নেই তুলনা।
আজকের দিবসটি মায়ের জন্য নিবেদিত। আজ বিশ্ব মা দিবস। প্রতিবছর মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার দেশে দেশে পালন করা হয় দিবসটি। বাংলাদেশেও নানা আয়োজনে সবাই মা দিবস পালন করে থাকেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো এদিন ভরে ওঠে মায়ের সঙ্গে সন্তানের ছবিতে; মায়ের প্রতি গুণমুগ্ধ লেখার ফুলঝুড়িতে। অনেকে ফুলেল শ্রদ্ধা-ভালোবাসা জানান, উপহার দেন। তবে মা দিবস পালনের বিষয়ে ভিন্নমতও রয়েছে। ভিন্নমতাবলম্বীদের যুক্তি- মাকে ভালোবাসার জন্য, শ্রদ্ধা জানানোর জন্য পৃথক দিবসের দরকার নেই। মায়ের প্রতি সন্তানের ভালোবাসা প্রতিদিন, প্রতিমুহূর্তে। সেই অর্থে একজন সন্তানের কাছে প্রতিটি দিনই মা দিবস।
পৃথিবীজুড়ে কালে কালে মাকে নিয়ে লেখা হয়েছে অজস্র কবিতা-গল্প, গান; নির্মিত হয়েছে অসংখ্য চলচ্চিত্র। এমন কোনো মাধ্যম নেই, যে মাধ্যমে নেই মাকে নিয়ে শত সহস্র কবিতা, গান।
যেভাবে সূচনা
যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ার স্কুলশিক্ষিকা আনা জারভিস। স্থানীয় অধিবাসীদের মধ্যে পারিবারিক বিচ্ছিন্নতা দেখে মর্মাহত এই নারী ভাবলেন, মায়ের জন্য অন্তত একটি বিশেষ দিন পালন করার মাধ্যমে সবাইকে সচেতন করা যেতে পারে। এর মাধ্যমে পারিবারিক বন্ধনও দৃঢ় হবে। কিন্তু তার এ ভাবনা বাস্তবে রূপ নেওয়ার আগেই মারা যান আনা। ১৯০৫ সালের ৯ মের ঘটনা এটি। আনার মৃত্যুর পর তার মেয়ে মায়ের শেষ ইচ্ছাপূরণে উদ্যোগী হন। তার মা ফিলাডেলফিয়ার যে গির্জায় উপাসনা করতেন, সেখানে সব মায়েকে নিয়ে ১৯০৮ সালে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন তিনি বন্ধুদের সহায়তায়। সেই থেকে শুরু হয় মা দিবস। ৬ বছর পর ১৯১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আনুষ্ঠানিকভাবে মে মাসের দ্বিতীয় রবিবারকে মায়েদের জন্য উৎসর্গ করে সরকারি ছুটির দিন ঘোষণা করা হয়। তাৎপর্য বিবেচনায় এখন বিশ্বের অনেক দেশেই এ দিনটিতে মা দিবস পালিত হয়। তবে এর ব্যতিক্রমও রয়েছে। যেমন- গ্রিসে মা দিবস পালন করা হয় ২ ফেব্রুয়ারি; ব্রিটেনে মার্চের চতুর্থ রবিবার; থাইল্যান্ডের রানি সিরিকিটের জন্মদিন কেন্দ্র করে আগস্ট মাসে পালন করা হয় মা দিবস।