গতিপথ ও গতিবেগ ঠিক থাকলে আজ রবিবার সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানবে চরম প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা। আবহাওয়াবিদদের আভাস সত্যি হলে ঘূর্ণিঝড়টি ঘণ্টায় ১৫০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার গতিতে উপকূলে আঘাত হানবে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে কক্সবাজারের টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন। গতকাল দুপুরে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়। দেশের অনেক এলাকায় আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসের আশঙ্কাও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ৮ থেকে ১২ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে উপকূলের নিচু এলাকায়।
এদিকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার লাখো মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে স্থগিত করা হয়েছে ছয় শিক্ষাবোর্ডের আজ ও আগামীকালের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে উপকূলীয় এলাকার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে সাগর উত্তাল রয়েছে। গতকাল সকাল থেকে টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন এলাকায় থেমে থেমে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়। বিকাল ৩টার পর থেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দারা ঘরবাড়ি ছেড়ে দ্বীপের ৩৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যান।
গতকাল রাতে আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও আশপাশের এলাকায় অবস্থানরত অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ উত্তর-উত্তর পূর্বদিকে অগ্রসর এবং আরও ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হবে। এরপর রবিবার (আজ) সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে কক্সবাজার-উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে পারে। আজ মধ্যরাত নাগাদ চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকায় অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাব শুরু হতে পারে। অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৮০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া আকারে ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
গতকালই মোখা চরম প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়। ভারতের আবহাওয়া বিভাগ জানায়, সুপার সাইক্লোনের ঠিক আগের ধাপে পরিণত হয়েছে ঘূর্ণিঝড়টি।
গতকাল দুপুরে ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্রে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ১৮০ থেকে ১৯০ কিলোমিটার, যা দমকা হাওয়ার আকারে ২১০ কিলোমিটারে উঠছে।
ভারতের আবহাওয়া বিভাগ বলছে, চরম প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে আঘাত হানার আগে আরও শক্তি সঞ্চয় করবে। তবে যখন উপকূল অতিক্রম করবে, তখন এর শক্তি কিছুটা কমে আসবে।
ঘণ্টায় ১৫০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার বাতাসের তীব্রতা নিয়ে রবিবার দুপুর নাগাদ ঝড়টির উপকূলে আঘাত হানবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আবহাওয়া অফিস জানায়, অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে সবচেয়ে বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এই দুই জেলার অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮ থেকে ১২ ফুটের বেশি উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ভারতের আবহাওয়া বিজ্ঞানী ড. আনন্দ কুমার দাশ জানান, কক্সবাজার ও মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের কিয়াকপিউ বন্দরের মাঝ দিয়ে স্থলভাগে উঠে আসবে মোখা। এ ক্ষেত্রে এটি সিত্তে বন্দর এলাকা দিয়ে আঘাত হানবে। ফলে ওই বন্দর ও আশপাশের এলাকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
আন্তর্জাতিক দুর্যোগ সতর্কতাবিষয়ক সংস্থা গ্লোবাল ডিজাস্টার অ্যালার্ট অ্যান্ড কো-অর্ডিনেশন সিস্টেম (জিডিএসিএস) জানিয়েছে, মোখায় মিয়ানমারের প্রায় ৩০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে রাখাইন রাজ্যে।
এদিকে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র প্রভাবে চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল বিভাগে সর্বোচ্চ ২৮৯ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টির শঙ্কা প্রকাশ করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এই বৃষ্টিতে নদনদীর পানি বেড়ে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙামাটি ও বান্দরবান জেলার অনেক স্থান আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসের ঝুঁঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
ভারী বর্ষণের সতর্কবার্তায় বলা হয়, অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র প্রভাবে আজ ১৪ মে সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল বিভাগে ভারী (৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতি ভারী (২৮৯ মিলিমিটার) বর্ষণ হতে পারে। এই অতি ভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, যমুনা ও পদ্মা নদীর পানি বাড়ছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র কারণে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সারাদেশে অভ্যন্তরীণ নৌপথে সবরকম নৌযান চলাচল বন্ধ থাকবে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল এ তথ্য জানায়। বিআইডব্লিউটিএর জনসংযোগ কর্মকর্তা মোবারক হোসেন মজুমদার বলেন, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে। একই সঙ্গে বিআইডব্লিউটিএ পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সব কর্মচারীর ছুটি স্থগিত করেছে এবং সব ধরনের উদ্ধারকারী নৌযান প্রস্তুত রাখতে বলেছে।
এদিকে উপকূলীয় অঞ্চলের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আজ রবিবার থেকে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, যেসব উপকূলে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে পারে এবং ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে, সেসব এলাকার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যথারীতি চলবে।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে ফ্লাইট বন্ধ
আমাদের সময়ের নিজস্ব প্রতিবেদক (ঢাকা) জানান, নিরাপত্তার স্বার্থে গতকাল ভোর ৬টা থেকে আজ রবিবার মধ্যরাত পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের সব ফ্লাইট বন্ধ ঘোষণা করা হয়। শনিবার সকাল ৭টা থেকে রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে কক্সবাজার বিমানবন্দরের সব ফ্লাইট।
সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে গতকাল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ‘১৩ ও ১৪ মে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার থেকে বিদেশগামী যাত্রীরা যদি ঢাকা থেকে তাদের নির্ধারিত ফ্লাইটে উঠতে চান, তাদের সরাসরি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রা সময়ের কমপক্ষে পাঁচ ঘণ্টা আগে রিপোর্ট করার জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে।’
দুই শতাধিক হোটেল আশ্রয়ণকেন্দ্র
আমাদের সময়ের সরওয়ার আজম মানিক (কক্সবাজার) ও আবদুল্লাহ মনির (টেকনাফ) জানান, গতকাল সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত কক্সবাজারের ৭৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১ লাখ ৮৭ হাজার ৩৭০ জন আশ্রয় নিয়েছেন। জেলা প্রশাসক মো. শাহীন ইমরান জানান, আশ্রয়প্রার্থীদের খাবার নিশ্চিত করা হবে। কক্সবাজারের ১১২টি ও সেন্টমার্টিনের দুই শতাধিক হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে।
কক্সবাজার হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম সিকদার বলেন, সমিতি থেকে ৫৫টি হোটেল আশ্রয়ণকেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করেছি। হোটেলের নাম ও মোবাইল নম্বরও প্রকাশ করা হয়েছে।
এদিকে কক্সবাজার সৈকতে পর্যটক নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কক্সবাজার পর্যটন সেলের ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম বিল্লাহ বলেন, মোখার কারণে সাগর প্রচণ্ড উত্তাল। এ জন্য শনিবার সকাল থেকে সৈকতে পর্যটক নামা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে সৈকতের ৫টি প্রবেশদ্বারে লাল পতাকা টাঙানো হবে।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, রাত ৮টা পর্যন্ত দ্বীপের হাসপাতাল, হোটেল, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আশপাশের বিভিন্ন দোতলা হোটেলে প্রায় সাড়ে সাত হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।
সবচেয়ে বেশ ঝুঁকিতে রয়েছে উখিয়া ও টেকনাফের পাহাড়ে অবস্থিত ৩৩টি রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির। এসব শিবিরে বসবাস করছেন ১২ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা।
অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. সামছুদ্দৌজা নয়ন বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য ক্ষতি মোকাবিলায় সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবক ও ১ লাখ ৯০ হাজার শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
জাহাজশূন্য চট্টগ্রাম বন্দর
আমাদের সময়ের চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, মোখার কারণে শুক্রবার রাত থেকে মাদার ভেসেলগুলোকে (বড় জাহাজ) চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙ্গরে এবং লাইটারেজগুলোকে (ছোট জাহাজ) বন্দর চ্যানেল থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। নির্দেশনা মেনে জাহাজগুলো নিরাপদ স্থানে চলে যায়। ফলে গতকাল শনিবার সকাল থেকে জাহাজশূন্য হয়ে পড়ে চট্টগ্রাম বন্দর।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ চারটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করেছে। সেগুলো হলোÑ মেরিন বিভাগ (০২৩৩৩৩২৬৯১৬, ০১৭৫৯০৫৪৭৭), নিরাপত্তা বিভাগ (০১৫৫০০০১৩১১, ০১৭৩০৩৮৭৮২৯, ০১৫১৯১১৪৬৪৬), ট্রাফিক বিভাগ (০১৮৪০৮১৬৫৫৬) ও সচিব বিভাগ (০১৫৫৪৩২৫৪৪৭)।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে জানমালের নিরাপত্তায় চট্টগ্রামের অধিকাংশ তৈরি পোশাক কারখানা আজ রবিবার ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি কারখানাগুলোও রবিবার সকালে পরিস্থিতি বুঝে চালু রাখা বা ছুটির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন মালিকরা। তবে ঠিক কতগুলো কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান জানাতে পারেনি বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ।
গতকাল শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম ইপিজেডে আজ রবিবার বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ থাকার বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. আব্দুস সোবহান আমাদের সময়কে বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে এলএনজি গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ইপিজেডের অভ্যন্তরীণ ৭২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদনও বন্ধ হয়ে গেছে। এর পরও কিছু কারখানার শিপমেন্ট শিডিউলের কারণে নিজস্ব জেনারেটরের মাধ্যমে কারখানা চালু রাখবে। যদিও ইপিজেডের অর্ধেকের বেশি কারখানা রবিবার ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।’
মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি জানান, ‘মোখা’র সম্ভাব্য বিপদ সামনে রেখে প্রস্তুতি নিয়েছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে এই সমুদ্রবন্দরে জারি করা হয়েছে অ্যালার্ট ‘২’। একই সঙ্গে ঝুঁঁকি এড়াতে দুটি বিদেশি জাহাজকে বন্দরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
রাজবাড়ী প্রতিনিধি জানান, গত শুক্রবার রাত ১১টা থেকে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া, মানিকগঞ্জের আরিচা ও পাটুরিয়া নৌরুটে সব লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে বিআইডব্লিউটিএ। পরবর্তী নিদেশ না দেওয়া পর্যন্ত লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকবে। লঞ্চ বন্ধ থাকলেও এ নৌরুটে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
বরিশাল ব্যুরো জানায়, বরিশাল নদীবন্দর কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক জানান, বরিশালের অভ্যন্তরীণ ১১টি রুটের ৩৬টি লঞ্চ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি জানান, সেখানে পাহাড়ধসের আশঙ্কা রয়েছে। ইতোমধ্যে শুকনো খাবারসহ ৪৬টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রয়োজনে রান্না করা খাবার সরবরাহ করা হবে।
পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি জানান, ৬৪২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১৮৫টি, আমতলীতে ১১১, তালতলীতে ৫৩, পাথরঘাটায় ১২৪, বেতাগীতে ১১৪টি এবং বামনায় ৫৫টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে মোট ২ লাখ ৬৯ হাজার ৫১০ জন আশ্রয় নিতে পারবেন।
নোয়াখালী প্রতিনিধি জানান, উপকূলীয় চার উপজেলার মধ্যে সবচেয় ঝুঁকিতে আছে হাতিয়া ও কোম্পানীগঞ্জ। জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান জানান, ৪৬৩টি আশ্রায়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে।