গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুনের বিরুদ্ধে বিধি ভঙ্গ করে প্রচারপত্রে ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের ছবি ও নাম ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে। সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের ছবিসহ প্রচারপত্র অনেকের হাতে দেখা গেছে। বিষয়টি এখন গাজীপুরের ‘টক অব দ্য সিটি’।
সিটি করপোরেশন নির্বাচন আচরণ বিধিমালা ৮-এ পোস্টার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল সংক্রান্ত বিধিনিষেধের ৫ নম্বর উপবিধি অনুযায়ী, নির্বাচনী প্রচারে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নিজ ছবি ও প্রতীক ব্যতীত অন্য কারও নাম, ছবি বা প্রতীক ছাপাতে কিংবা ব্যবহার করতে পারবেন না। তবে শর্ত থাকে যে, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কোনো রাজনৈতিক দলের মনোনীত হলে সে ক্ষেত্রে তিনি কেবল তার দলের বর্তমান দলীয় প্রধানের ছবি পোস্টার বা লিফলেটে ছাপাতে পারবেন।
জায়েদা খাতুন নির্বাচনী পোস্টার ও লিফলেটে তার ছেলে বরখাস্ত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের নাম ও ছবি ছেপে তা ব্যাপকভাবে প্রচার করছেন। সিটি করপোরেশন নির্বাচন আচরণ বিধিমালা ৩২-এর ১ উপবিধি অনুযায়ী ‘কমিশন কর্তৃক প্রার্থিতা বাতিল’ বিষয়ে বলা আছে, এই বিধিমালার অন্যান্য বিধানে যা কিছুই থাকুক না কেন, যদি কোনো উৎস হতে প্রাপ্ত রেকর্ড কিংবা লিখিত রিপোর্ট হতে কমিশনের নিকট প্রতীয়মান হয় যে, মেয়র বা কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বী কোনো প্রার্থী বা তার নির্বাচনী এজেন্ট এই বিধিমালার কোনো বিধি লঙ্ঘন করেছেন বা লঙ্ঘনের চেষ্টা করেছেন এবং অনুরূপ লঙ্ঘন বা লঙ্ঘনের চেষ্টার জন্য, তিনি মেয়র বা ক্ষেত্রমতো কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার অযোগ্য হতে পারেন, তা হলে কমিশন বিষয়টি সম্পর্কে তাৎক্ষণিক তদন্তের নির্দেশ প্রদান করতে পারেন।
উপবিধি (১)-এর অধীন তদন্ত রিপোর্টপ্রাপ্তির পর কমিশন যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তার নির্বাচনী এজেন্ট বা তার নির্দেশে বা তার পক্ষে তার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্মতিতে অন্য কোনো ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান এই বিধিমালার কোনো বিধান লঙ্ঘন করেছেন বা লঙ্ঘনের চেষ্টার জন্য তিনি মেয়র বা কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার অযোগ্য হতে পারেন, তা হলে কমিশন তাৎক্ষণিকভাবে লিখিত আদেশ দ্বারা, উক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করতে পারবেন।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, এমন আচরণবিধি লঙ্ঘনে প্রার্থিতা বাতিলের সুযোগ রয়েছে। তবে প্রথমবার জরিমানা করে সতর্ক করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে আজ শুক্রবার প্রার্থীকে চিঠি দেওয়া হতে পারে।
এ বিষয়ে নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এএইচএম কামরুল হাসান বলেন, বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের নজরে এসেছে। তাকে প্রথমবারের মতো জরিমানা করে সতর্ক করা হতে পারে। এর পরও যদি তিনি তা অব্যাহত রাখেন, তা হলে পরবর্তী সময়ে নির্বাচন কমিশন কঠিন সিদ্ধান্ত নেবে।
ছেলের ছবি ব্যবহারের বিষয়ে জায়েদা খাতুনের বক্তব্যের জন্য তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করে পাওয়া যায়নি।