নগরের তাপমাত্রা সহনীয় পর্যায়ে রাখতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলামের মেয়ে বুশরা আফরিনকে ‘চিফ হিট অফিসার’ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তার নিয়োগের মাধ্যমে এশিয়ার প্রথম শহর হিসেবে ঢাকা উত্তর সিটিতে ‘চিফ হিট অফিসার’ (সিএইচও) নিয়োগ দেওয়া হলো।
গতকাল বুধবার বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এক অনুষ্ঠানে মেয়র আতিকুল ইসলাম নিজেই এ তথ্য জানান।
অনুষ্ঠানে ডিএনসিসি ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অ্যাড্রিয়েন আর্শট-রকফেলার ফাউন্ডেশনের মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি হয়। এর আওতায় ঢাকার তাপমাত্রা কমাতে যৌথভাবে কাজ করবে সংগঠন দুটি।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে উত্তরের মেয়র বলেন, সিএইচও বুশরা আফরিন প্রচণ্ড গরমের মধ্যেও ঢাকা উত্তরকে নিরাপদ করার নেতৃত্বে দেবেন। তাপমাত্রা কমাতে তিনি শহরব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবেন। ঢাকা উত্তরের জনগণের মধ্যে তাপবিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি, সুরক্ষা প্রচেষ্টা ত্বরান্বিতকরণসহ নতুন নতুন কাজ করবেন।
এ সময় বুশরা আফরিন বলেন, ‘আমার শহরের প্রচণ্ড তাপ থেকে মানুষ ও সম্প্রদায়কে রক্ষা করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বিভিন্ন শহরের নেতাদের ও বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত একটি বৈশ্বিক সংগঠনে যোগ দিতে পেরে আমি রোমাঞ্চিত। আমরা শহরের প্রচণ্ড তাপ থেকে মানুষ ও সম্প্রদায়কে রক্ষা করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকা শহরে তাপমাত্রা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে বিশেষ করে স্বল্প আয়ের শ্রমজীবী মানুষ, বস্তিবাসী, অভিবাসীসহ নারী ও শিশুরা বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। ঢাকার একজন স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে আমি জানি, তীব্র তাপপ্রবাহ মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার বিকল্প নেই।’
আর্শট-রকফেলার পরিচালক ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্যাথি বাঘম্যান ম্যাকলিওড বলেন, তীব্র তাপপ্রবাহ সারা বিশ্বের শহরগুলোতে প্রেসার কুকারের মতো কাজ করছে। ঢাকার উত্তর অংশে জনসংখ্যা বেশি হওয়ায়, এখানে তাপসংক্রান্ত ঝুঁকি আরও বেশি। তাই ঢাকা উত্তরে একজন সিএইচও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তার নেতৃত্বে এ শহরকে গরম থেকে বাঁচানোর নানা পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, বুশরা আফরিনের ভূমিকা সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার জন্য একটি রোল মডেল হয়ে দাঁড়াবে। তা ছাড়া আর্শট-রকফেলার ফাউন্ডেশন এ উদ্যোগের অংশীদার হতে পেরে গর্বিত। ডিএনসিসিবাসীর সুরক্ষায় আমরা সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতা করব।’
জানা গেছে, বুশরা আফরিন কানাডার কুইন্স ইউনিভার্সিটি থেকে গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ ও ঘানার ইনস্টিটিউট অব লোকাল গভর্নমেন্ট স্টাডিজে পড়াশোনা করেছেন। তিনি ঘানার বলগাটাঙ্গায় একটি নারী উন্নয়ন প্রকল্পেও কাজ করেন।
পরে বাংলাদেশের বৃহত্তম এনজিও ‘শক্তি ফাউন্ডেশন’র ব্যবস্থাপনা নির্বাহী হিসেবে যোগ দেন বুশরা। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশের বিশিষ্ট প্রাণী অধিকার সংস্থা অভয়ারণ্যের পলিসি কনসালটেন্ট হিসেবে ডিএনসিসির সঙ্গে কাজ করেছেন।