জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণের সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু।
তিনি বলেন, ২০১৯ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে গণতান্ত্রিক শক্তির সঙ্গে গণতান্ত্রিক শক্তির নির্বাচন। সেই নির্বাচনে গণতন্ত্রের অচল মাল সচল করার সুযোগ নেই। খালেদা জিয়ারও অংশগ্রহণের সুযোগ নেই।
শনিবার (২৭ জুন) সকালে জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে এ মন্তব্য করেন ইনু।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে অগণতান্ত্রিক শক্তিকে সুযোগ দিলে গণতন্ত্রের দুর্যোগ নেমে আসে। গণতন্ত্রে ছোবল মারে। যেমনটি মারছে জামায়াত, যুদ্ধাপরাধী ও জঙ্গিবাদীরা।
তিনি বলেন, সাজানো বাগানে শুকর ছেড়ে দিলে সেই বাগান তছনছ করে দেয়। বর্তমানে গণতন্ত্রে কোনো ঘটতি নেই, আছে বিষফোরা। গণতন্ত্রে বিষফোরা আছে। গণতন্ত্রের বিষফোরা জামায়াত-জঙ্গিরা। এসব বিষফোরা ছোট-খাটো অপারেশনের মাধ্যমে বাদ দিতে হবে। এতে আমাদের একটু কষ্ট হবে। তবে আমরা এদের কোনোভাবেই ছাড় দিতে পারি না।
হাসানুল হক ইনু বলেন, বর্তমানে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছে। তাতে বাংলাদেশে পাকিস্তান মার্কা, সামরিক সরকার মার্কা, জামায়াত মার্কা রাজনীতি আর হবে না। দিন শেষ। দেশকে পিছিয়ে দেওয়ার রাজনীতি আর হবে না। শেখ হাসিনা যে সমৃদ্ধির মহাসড়কের সম্মুখ যাত্রার মহাসড়কে টেনে তুলেছেন সেই মহাসড়কে খালেদা জিয়ার জায়গা নেই। শেখ হাসিনার বিকল্প ‘আগুন-সন্ত্রাসী’ কখনই না। গণতন্ত্র উন্নয়ন সমৃদ্ধির রাজনীতি থেকে খালেদা নিজেই নিজেকে খরচের খাতায় নিয়ে গেছেন।
খালেদাকে জিয়াকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, আপনি না বুঝলেও দলের নেতা-কর্মীরা, জনগণ বুঝে গেছে। এটাও বুঝে গেছে আপনি যতই লম্ফঝম্প করেন না কেন আগুনে মানুষ পোড়ানো অপরাধে জনগণের আদলত থেকে রেহাই পাবেন না। আপনি যতই কৌশল বদলান না কেনো, যতই মোদির সঙ্গে করমর্দন করেন না কেন আপনার রাজনীতির ইতিহাস লেখা হয়ে গেছে। রাজনীতির বাইরে থাকতে হবে এবং আদালতের বারান্দায় যেতে হবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, অনেকে ফ্যাশান করে বলেন গণতন্ত্রে ঘাটতি আছে। গণতন্ত্র মাপবেন কি দিয়ে? বাক স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দিয়ে। যদি গণতন্ত্রের মাপকাঠি তাই হয়ে থাকে, তাহলে যারা সমালোচনা করছেন তারাই প্রমাণ করেছেন গণতন্ত্রের সর্বোচ্চ সুযোগ নিচ্ছেন। এখানে গণতন্ত্রের কোনো ঘাটতি নেই। বর্তমানে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণমাধ্যমে এবং স্বাধীন মত প্রকাশের স্বর্ণযুগ পালন করছি।
খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে ইনু বলেন, শেখ হাসিনা নরেদ্র মোদির সঙ্গে যে চুক্তি এবং সমঝোতা স্বাক্ষর করেছেন। তার কোন চুক্তি স্বাধীনতাবিরোধী, দেশবিরোধী, অর্থনীতিবিরোধী আপনি (খালেদা) বলুন। আপনি কাল যদি ক্ষমতায় আসেন তাহলে কোন চুক্তিটি বাতিল করবেন বলুন। আপনি একটিও বাতিল করতে পারবেন না। কারণ এসব চুক্তি দেশের জনগণের স্বার্থেই হয়েছে। খালেদাসহ যারা এনিয়ে সমালোচনা করছেন তারা হয় বোকা-মুর্খ আর না হয় জ্ঞানপাপী।
‘খালেদা জিয়া তো বোকা নন, তিনি ইচ্ছা করেই এই সমালোচনা করছেন। তিনি হলেন জ্ঞানপাপী’ -মন্তব্য করে ইনু বলেন, আপনি তো সমঝোতায় বিশ্বাস করেন না, গোপন তোষামদে বিশ্বাসী।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আরও কয়েক বছর দেশ পরিচালিত হলে এই সংসদে ৭ লাখ কোটি টাকার বাজেট দেওয়া হবে বলেও দাবি করেন হাসানুল হক ইনু।