গ্রাম বাংলা টিম : সামাজিক বনায়ন প্রকল্পের আওতায় বনায়নের নামে সরকারী অর্থ খরচ করে বন উজার ও প্লটের নামে অলিখিতভাবে জমি বিক্রি হচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ভাওয়াল গড়ের আওতায় সামাজিক বনায়ন কার্যক্রমে বনের মধ্যে বনায়ন করা হয়ে থাকে। বনের খালি জায়গায় বাগান করার মাধ্যমে এই প্রক্রিয়ায় বনায়ন হয়। সরকারী অর্থায়নে বনায়ন করার কথা থাকলেও বন বিভাগের লোকজন খালি জায়গায় বাগান করেন জনগনের টাকায়। কিছু সংখ্যক মানুষের নিকট থেকে টাকা নিয়ে অংশিদারিত্বের মাধ্যমে বনায়নের কথা বলে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হচ্ছে বন। কথিত বাগান করে বন বিভাগের লোকজন এক দিকে সরকারী টাকা আত্মসাৎ করছেন অপরদিক বাগানের কথা বলে জনগনের নিকট থেকে প্রতারণা করে অর্থআদায় করছেন। সুতরাং বনায়নের মাধ্যমে সামাজিক বনায়নের ফলে বাগান করে বন বৃদ্ধি হচ্ছে না বরং এতে বন ধ্বংস হচ্ছে।
গোপন সূত্র বলছে, বন কর্মকর্তারা বনের ভেতরে একটি নির্দিষ্ট জায়গা বনায়নের জন্য নির্ধারন করেন। সামাজিক বনায়নের আওতায় প্রথমে নির্ধারিত স্থানের ছোট ছোট গাছ আগাছা হিসেবে পরিস্কার করা হয়। এই আগাছা পরিস্কারের জন্য সরকারী বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাৎ করে বনের লোকজন। পরে কথিত ইজারাদারদের দিয়ে আগাছা পরিস্কারের কাজ করেন টাকা ছাড়াই। ইজারাদাররা আগাছার নামে বড় বড় গাজারী গাছও কেটে নিয়ে যায়। একই সঙ্গে কপিচ গাছ(ছোট ছোট গজারীর চারা গাছ) গুলো কেটে আগাছার সাথে পাচার করা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, কথিত বনায়নের নামে সৃজিত বাগান পরিচর্যার অভাবে মরেও যায়। এরপর মরে যাওয়া বাগান পরিত্যক্ত ঘোষনা করে বনবিভাগ প্লটটি খালি করে। এর পর কথিত উপকারভোগী বা প্লটের মালিক খালি জায়গা দখলের জন্য প্রক্রিয়া শুরু করেন। খালি জায়গায় প্রথমে টিনের ঘর, পরে হালকা দালান ও পরে স্থায়ী পাকা স্থাপনা নির্মান করে জবর দখল করা হচ্ছে বন বিভাগের জমি। এই প্রক্রিয়ায় প্লটের মাধ্যমে বনের জমি বে-দখলে চলে যাচ্ছে। ভাওয়াল গড়ের গাজীপুর জেলার প্রায় সকল জায়গায় বনের জমি এই প্রক্রিয়ায় জবর দখল হচ্ছে।
সরেজমিন বনবিভাগের বিভিন্ন রেঞ্জ ঘুরে দেখা যায়, শত শত মানুষ উপকারভোগী হিসেবে বনের জায়গায় বসবাস করছেন। পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করতে করতে এক সময় ওই জায়গায় শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এছাড়া বনের জায়গায় বাড়ি ঘর নির্মানের হিড়িক নিত্য দিনের। এক শ্রেনীর দালাল বন বিভাগের অসৎ কর্মচারীরদের সাথে মিশে তাদের যোগশাযশে গাছ পাচার, বনের জায়গা দখলে ব্যস্ত রয়েছেন।
গাজীপুর জেলায় ছোট বড় প্রায় শতাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠান বনের জায়গা দখল করে গড়ে উঠেছে। গাছ কেটে জমি দখলের ওই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বেহাত হচ্ছে ঐতিহ্যৃবাহী ভাওয়াল গড়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, বন রক্ষক, বন খেকো ও বনদস্যু চক্রের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন কতিপয় নামধারী ও হলুদ সাংবাদিক। তারা বিভিন্ন সরকারের মন্ত্রীর লোক পরিচয়ে ধ্বংস করছেন ঐতিহ্যৃবাহী ভাওয়াল গড়।
চলবে–