সরকার আগুন নিয়ে খেলা শুরু করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ সোমবার এক ইফতার পূর্ব অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন। রাজারবাগে হোটেল হোয়াইট হাউজে গণতন্ত্র মঞ্চের উদ্যোগে রাজনীতিবিদের সন্মানে এই ইফতার মাহফিল হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার এখন আগুন নিয়ে খেলা শুরু করেছে। তারা একদিকে বাজারে বাজারে আগুন দিচ্ছে, অন্যদিকে সমস্ত ইচ্ছা-আশা-আকাঙ্ক্ষাগুলোকে আগুনে ঝালিয়ে দিচ্ছেন। পুরো ব্যাপারটাই হচ্ছে তাদের (সরকার) এগুলো সব সাজানো, তৈরি করা এবং এই তৈরি করা নিয়ে সেজন্য বললাম আজকে তারা আগুন নিয়ে খেলা শুরু করেছে’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই আগুন নিয়ে খেলা করে লাভ হবে না, আগুনে কিন্তু আপনারাই (ক্ষমতাসীনরা) সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবেন।’
নিউ সুপার মার্কেটের অগ্নিকাণ্ডের দায় সিটি করপোরেশনের মন্তব্য করে করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নিউ সুপার মার্কেটে আগুন লাগার পরে প্রধানমন্ত্রী বললেন যে, ‘‘এটাতে বিএনপি এবং জামায়াত জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে’’ অথচ সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ীরা পরিষ্কার করে বলছেন, প্রত্যেকটি পত্রিকাতে এসেছে যে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের লোকেরা এসেছিল ভোর সাড়ে ৫টার সময়ে, তাদের পরনে ছিল সিটি করপোরেশনের পোশাক, তারা ড্রিল মেশিন নিয়ে এসেছিল এবং যে ফুটওভার ব্রিজটা সেটা তারা যখন ড্রিল দিয়ে সিড়ি ভাঙছিল তখন আগুন লেগে যায়।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা এখন যে জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছি সেই জায়গায় আমাদের একটাই মাত্র পথ খোলা আছে সেই পথ হচ্ছে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে জনগণকে সংগঠিত করে এই ভয়াবহ যে একটা দানবীয় সরকার আমাদের ওপরে চেপে বসে আছে তাদেরকে সরিয়ে জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
তিনি বলেন, আমরা আন্দোলন শুরু করেছি আমাদের সেই একাত্তর সালের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করবার জন্য, আমরা আন্দোলন শুরু করেছি আমাদের অধিকারকে ফিরে পাওয়ার জন্য, আমরা আন্দোলন শুরু করেছি আমাদের ভাতের অধিকার, ভোটের অধিকার, বেঁচে থাকবার অধিকার, একটি সুন্দর কল্যাণমূলক রাষ্ট্র নির্মাণ করবার জন্য সেই আন্দোলন শুরু হয়েছে, সংগ্রাম শুরু হয়েছে।’
ফখরুল বলেন, ‘আজকে আমরা মানু্ষরে কাছে এই কথাটা বলতে চাই, এখন এই সময় এসেছে যে, আমাদের সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে, আমাদের সবাইকে একজোট হয়ে আমাদের রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি, সংগঠন সকরে একযোগে এই সরকার যারা আমাদের সমস্ত স্বপ্নগুলোকে ভেঙে দিয়েছে, যারা আমাদের অর্জনগুলোকে ধ্বংস করেছে, তাদেরকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থেই জনগেণের একটি সরকার, জনগণের একটি পার্লামেন্ট গঠন করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই একসঙ্গে একজোট হয়ে ১০ দফা কর্মসূচি দিয়েছি, আমরা রাষ্ট্র সংস্কারের কথা বলেছি। আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাধ্য করি এই সরকারকে ১০ দফা দাবি মেনে নিতে।’ বিরোধী রাজনৈতিক দলসমূহকে সমস্ত শক্তি নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে জনগণের সংগ্রামে শরিক হওয়ার আহ্বানও রাখেন বিএনপি মহাসচিব।
গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকির সভাপতিত্বে ও গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা রাশেদ খানের পরিচালনায় আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন জেএসডির আ স ম আবদুর রব, বিএনপির ড. আবদুল মঈন খান, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের মোস্তফা মোহসীন মন্টু, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, জাসদের নাজমুল হক প্রধান, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, গণদলের এ টি এম গোলাম মাওলা চৌধুরী, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, জাগপার খন্দকার লুতফুর রহমান, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বিকল্পধারা বাংলাদেশের অধ্যাপক নুরুল আমিন ব্যাপারী, পিপলস পার্টির আবদুল কাদের, প্রগতিশীল ন্যাপের পরশ ভাসানী।
এ সময় বিএনপির বরকত উল্লাহ বুলু, জহির উদ্দিন স্বপন, শামা ওবায়েদ, গণ অধিকার পরিষদের রেজা কিবরিয়া, নুরুল হক নূর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।