‘বরিষ ধরা মাঝে শান্তি বারি’—রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানকে প্রতিপাদ্য ধারণ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় অনুষ্ঠিত হলো মঙ্গল শোভাযাত্রা। শুক্রবার পয়লা বৈশাখ ১৪৩০ বঙ্গাব্দের প্রথম সকালে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হয়।
সকাল ৯টায় শোভাযাত্রাটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে শুরু হয়ে এটি শাহবাগ মোড় ঘুরে আবার চারুকলায় গিয়ে শেষ হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার চারুকলায় পরিদর্শন শেষে আয়োজন নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
বাঙালির বর্ষবরণে অন্যতম অনুষঙ্গ মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজন করা হয় সম্পূর্ণ নিজ অর্থায়নে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুদান ও চারুকলার শিক্ষার্থীদের ফান্ড রাইজিংয়ের ওপর নির্ভর করে আয়োজন। গত ১৯ মার্চ থেকে ফান্ড রাইজিং ক্যাম্পেইন শুরু হয়।
এবারের প্রতিপাদ্যের তাৎপর্য নিয়ে নববর্ষ উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ও চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. নিসার হোসেন বলেন, ‘এবারের প্রতিপাদ্য ‘বরিষ ধরা মাঝে শান্তির বারি’। প্রতিবছর আমরা বাংলাদেশ ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এই প্রতিপাদ্য ঠিক করি। বর্তমানে মানুষের মাঝে হানাহানি, অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। তার চরম মাত্রায় পৌঁছেছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। ফলে বৈশ্বিক অর্থনীতিতেও চরম ধস নেমেছে। তাই আমাদের এবারের কামনা পৃথিবীতে শান্তি নেমে আসুক।’
সকালে শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান। শোভাযাত্রায় সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন স্তরের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়েছেন। কঠোর নিরাপত্তার চাদরে মোড়ানো রয়েছে পুরো এলাকা।
এবার শোভাযাত্রায় স্থান পেয়েছে টেপা পুতুল, ময়ুর, নীল গাই, হাতি ও বাঘ। পাঁচটি মোটিফ ছাড়াও শোভাযাত্রায় অংশ গ্রহণকারীদের হাতে ছিলো বিভিন্ন আকৃতির মুখোশ।
গত তিন দশক ধরে প্রতি বছরই পয়লা বৈশাখে চারুকলার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হচ্ছে। ২০১৬ সালে ইউনেসকোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পায় এই শোভাযাত্রা।