এতেকাফ শুরু হয়েছে। শুরু হয়েছে রহমতের জোয়ার। মসজিদে-মসজিদে অবস্থান নিয়েছেন মোমেন অতিথিরা। পৃথিবীর মায়াজাল ছিন্ন করে পড়ে আছেন আরেক ভুবনে, মসজিদের এতেকাফে। এতেকাফে রচিত হবে আল্লাহ ও বান্দার গভীর সেতুবন্ধ। হজরত শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভি বলেন, মসজিদের এতেকাফ হচ্ছে আত্মিক প্রশান্তি, হৃদয়ের পবিত্রতা, চিন্তার বিশুদ্ধতা ও ফেরেশতাকুলের গুণাবলি অর্জন। শবেকদরের সৌভাগ্য ও কল্যাণ লাভসহ সব ধরনের ইবাদতের অখ- সুযোগ লাভের প্রধান উপায়। আল্লাহর রাসুল (স) রোজার শেষ ১০ দিন এতেকাফ করেছেন এবং উম্মতের সৎ ও ভাগ্যবান লোকদের জন্য তা সুন্নত ঘোষণা করেছেন। হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগা- ২য় খ-, পৃষ্ঠা : ৪২
রাসুল (স) ইন্তেকালের পূর্ব রমজান পর্যন্ত রোজার শেষ ১০ দিন এতেকাফ করেছেন (বুখারি শরিফ : ১৯৩৯)।
মানব সভ্যতার ইতিহাসে বিভিন্ন নবীর এতেকাফের প্রমাণ পাওয়া যায়। হজরত ইব্রাহিম (আ)-এর জন্য কাবা শরিফে তোয়াফ নামাজ ও এতেকাফের নির্দেশ ছিল। বাবা ছেলে ইব্রাহিম ইসমাইলের যৌথ নির্মাণ ঘর কাবার উদ্দেশে আল্লাহ বলেন, আমি ইব্রাহিম ও ইসমাইলকে আদেশ করলাম তোমরা আমার ঘর পবিত্র রাখো তোয়াফ এতেকাফ ও নামাজিদের জন্য। সুরা বাকারা : ১২৫
হজরত মুসা (আ) এতেকাফ সাধনায় তুর পাহাড়ে প্রভুর ধ্যানে মগ্ন ছিলেন। তফসিরে মায়ারেফুল কোরআন
আল্লামা শামী বলেন, উম্মতে মুহাম্মদির জন্য এতেকাফ সুন্নতে কেফায়া। কোনো এলাকার পক্ষ থেকে দু-একজন আদায় করলে সবার দায়িত্ব সেরে যায়। দুররুল মুখতার
এতেকাফের ফজিলত সম্পর্কে রাসুল (স) বলেন, যে ব্যক্তি একদিনও এতেকাফ করবে আল্লাহ কেয়ামতের দিন তার এবং জাহান্নামের মধ্যে ৩ খন্দক পরিমাণ ব্যবধান করে দেবেন। এক খন্দক ৫০০ বছরের পথ। বোখারি শরিফ : ৩৯৬৫
আল্লামা ইবনুল কাইয়িম (রহ) বলেন, এতেকাফের উদ্দেশ্য হচ্ছে পৃথিবীর মোহনীয় মায়াজাল থেকে মুক্তি লাভ। আল্লাহর সঙ্গে প্রেমময় সম্পর্ক স্থাপন। এতেকাফ যাপন আত্মার পরম উন্নতি সাধিত হয়। এতেকাফকারীর মনে আল্লাহ প্রেমের ঢেউ খেলে। তার চিন্তা-চেতনা ও বোধে আল্লাহর নৈকট্য লাভই কামনা থাকে। (যাদুল মায়াদ- ১৮৭)
প্রভুর প্রেম পরশে যারা আজ মসজিদের অতিথি, আল্লাহ তাদের মঙ্গল করুন।
মুদাররিস : শেখ জনূরুদ্দীন (রহ) দারুল কোরআন মাদরাসা, চৌধুরীপাড়া, ঢাকা