বাজেটের সমালোচনায় জাপা মহাসচিব

Slider রাজনীতি

Parlament_Bablo_743576091
জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: প্রস্তাবিত ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটের কঠোর সমালোচনা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। বাজেট বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে তিনি বলেন, প্রতিবছরই ঘাটতি বাজেট বেড়েই চলছে। এবারও ঘাটতি বাজেট রাখা হয়েছে ৮৬ হাজার ৫৭ কোটি টাকা। এতে কি বুঝাচ্ছে দেশ এগুচ্ছে?

এসময় তিনি শেয়ারবাজার ও ব্যাংকের লুটপাটের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, দেশে সুশাসন নেই, জবাবদিহিতা নেই। যার ফলে জনগণের টাকা লুটপাট হয়ে যাচ্ছে। শুধু কথার ফুলঝুড়ি দিয়ে মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয় না।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) সকালে জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত (২০১৫-১৬) অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি স্পিকারের উদ্দেশে এসব কথা বলেন। এসময় অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাজেট আলোচনার শুরুতেই অর্থমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বাবলু বলেন, এখানে অর্থমন্ত্রী নেই, প্রতিমন্ত্রী নেই তাহলে কার কাছে আলোচনা করবো। এই আলোচনা কি শুধু সংসদে রেকডিং এর জন্য?

তিনি বলেন, আমরা সংসদে সেই বিরোধী দল হতে চাই যারা মানুষের পক্ষে কথা বলবে। আমরা ফাইল ছোড়াছুড়ি করতে চাই না। আপনাদের পক্ষে কথা বলতে চাই না। আপনাদের পক্ষে কথা বলার জন্য ২৫০ জন এমপি আছে। আমরা মানুষের মনের কথা বলতে চাই।

তিনি বলেন, অর্থনীতির দু’টো কম্পোনেন্ট। একটা মানি মার্কেট, ক্যাপিটাল মার্কেট। কিন্তু মানি মার্কেটে বিশৃঙ্খল অবস্থা। গত ৫/৬ বছরে বেসিক ব্যাংক থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। কারা এই টাকা লুটপাট করেছে। আজ পর্যন্ত কারো নাম বের হলো না। অনেকগুলো কমিটি হয়েছে। হলমার্ক বলেন, ডেসটিনি বলেন, এসব প্রতিষ্ঠান যে টাকা লুটপাট করেছে সে টাকা সরকারের টাকা নয়, জনগণের টাকা। এনিয়ে তদন্ত রিপোর্ট পরিষ্কার হয় নাই।

প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের উদ্দেশ্য বলেন, আপনার সরকারের আছেন জনগণের স্বার্থ রক্ষা করার জন্য নয়, জনগণের টাকা লুটপাট করার সুযোগ করে দেওয়ার জন্যও নয়। লুটপাট না হয় সেটা বন্ধ করার জন্য আছেন। এ পর্যন্ত যত কমিটি করেছেন তাকে কিছুই করতে পারেনি। একটি টাকাও আদায় করতে পারেনি। যারা দায়ী তাদের আইনের আওতায় আনতে পারেনি। আমরা বিরোধী দলের কেউ এই লুটপাটের টাকার দায় নিব না। একদিন আপনাদের এর জন্য জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।

বাংলাদেশ হতে সুইস ব্যাংকে টাকা পাচারের বিষয়ে বলেন, গত তিনবছরে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। এসময় এক পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, ২০১২ সালে ১ হাজার ৯৯১ কোটি টাকা, ২০১৩ সালে ৩ হাজার ১৪৯ কোটি এবং ২০১৪ সালে ৪ হাজার ২৮৩ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। এর সবই অবৈধ টাকা। যারা দেশের টাকা পাচার করলো তারা কারা। এদের নাম জানতে চাই। যারা টাকা পাচার করছেন তারা আপনার শত্রু, আমাদের শত্রু। এই, টাকা ফেরত আনতে হবে পাচারকারীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।

তিনি বলেন, শুধু কথা কথার ফুলঝুড়ি দিয়ে মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে না, কিছু শিল্প উন্নয়ন হলেই দেশের উন্নতি হবে না। এসব বিষয় দেখতে হবে।

যোগাযোগমন্ত্রীর সমালোচনা করে বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ে রোড চার লেন নিয়ে যোগাযোগমন্ত্রী বলেন এই করছি, আজ করবো, আগামী মাসে হবে। এসব অনেক কথা শুছে। আমরা চালু দেখতে চাই।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, হল দখল বন্ধ না হলে সুশিক্ষা কোন দিনই হবে না। শিক্ষিত জাতি কখনই পাবেন না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ২৫ বছর ধরে ঢাবি’তে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হচ্ছে না। বিএনপি দেয়নি, আওয়ামী লীগও দেয়নি। আমাদের স্বৈরাচার শাসক বলা হয়। আমাদের আমলে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়েছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *