দেশীয় মানসম্মত সিনেমার অভাবে ধুঁকছে অবশিষ্ট প্রেক্ষাগৃহগুলো। ফলে আসন্ন ঈদ ঘিরে মুক্তি প্রতীক্ষিত সিনেমা নিয়ে প্রযোজকদের উত্তেজনা থাকলেও উত্তাপ নেই প্রদর্শকদের মনে। তাদের পিঠ এখন ঠেকেছে দেয়ালে। ইতোমধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে সবুজ সংকেত পাওয়া গেছেÑ এমন গুঞ্জনে চোখ তাই ঈদ-পরবর্তী উপমহাদেশীয় সিনেমা ঘিরে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদের পর পরই তিনটি চলচ্চিত্র দেশের সিনেমা হলে আসার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে। এর মধ্যে মধুমিতা, চিত্রা মহল, নিউ গুলশান, উল্কা, ঝুমুর, চন্দ্রিমা, সাভার সেনা অডিটরিয়াম, মধুবন সিনেপ্লেক্স, পান্না, মণিহার, ছায়াবানীসহ ৩০টি হলে আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন সার্ভার বসানোর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ১০টি সার্ভার এসেছে ঢাকায়। বাকি ২০টি সার্ভার ঈদের আগেই ঢাকা পৌঁছবে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
ঈদের পর পরই শাহরুখ খান অভিনীত ‘পাঠান’ আসবে। এর পরই আসন্ন ঈদে ভারতে মুক্তিপ্রতীক্ষিত সালমান খান অভিনীত ‘কিসিকা ভাই কিসিকা জান’ সিনেমাটি ঢাকার প্রেক্ষাগৃহে চালানো হবে। ঠিক তার পর পরই প্রেক্ষাগৃহে দেখা যাবে জিৎ অভিনীত ‘চেঙ্গিস’। যে কারণে প্রেক্ষাগৃহগুলোর ডেকোরেশান চলছে। ঈদের আগেই কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন মধুমিতা সিনেমা হলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ। তিনি বলেন, ‘গত চার মাসে প্রচুর টাকা লোকসান দিয়েছি। যখন জানলাম সরকার উপমহাদেশীয় সিনেমা মুক্তি দেবেনÑ সেটা ভেবে ভেতরের ডেকোরেশন ঠিকঠাক করছি। বাকি ছিল সাউন্ড, সেটাও এরইমধ্যে হয়ে যাবে। অর্থাৎ পরিপূর্ণ প্রেক্ষাগৃহে ঈদ থেকে দর্শক সিনেমা উপভোগ করতে পারবেন।’
একই অবস্থা চিত্রা মহলেরও। হলটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাগর জহির বলেন, ‘আমাদের হলের কন্ডিশন আগে থেকেই ভালো। তার পরও সার্ভার পরিবর্তনের ধারায় সাউন্ড ও পর্দা নতুন আসছে। আশা করছি, দর্শক আরও আনন্দ নিয়ে সিনেমা উপভোগ করতে পারবেন।’ মধুমতি ও চিত্রা মহলের মতো একই দৃশ্য মণিহার, ঝুমুর, সেনা অডিটরিয়াম, মধুবন সিনেপ্লেক্সেও। মধুবন সিনেপ্লেক্সের কর্ণধার ইউনূস রুবেল বলেন, ‘আমাদের সবকিছুই আগে থেকে ঠিকঠাক ছিল। ঈদের আগে যদি সার্ভার ঠিক হয়ে যায়, তাহলে আর কোনো সমস্যা থাকবে না।’
হিন্দি সিনেমা আসার খবরে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে কুষ্টিয়ায় একটি সিনেপ্লেক্স।
নিউ গুলশান সিনেমা হলের কর্ণধার আমির হামযা বলেন, ‘ঋণ-প্রণোদনার জন্য আবেদন করেছি; কিন্তু ব্যাংকের প্রশ্নÑ সিনেমা নেই, পরিশোধ করব কীভাবে? তাদের এমন প্রশ্নের জবাব দিতে পারিনি। এবার যদি ঈদের পর ভারতের সিনেমা মুক্তি পায়, তা হলে ঋণের জন্য আবেদন করতে পারব।’
এদিকে আসন্ন ঈদে শাকিব খানের ‘লিডারÑ আমিই বাংলাদেশ’ ছাড়াও গল্পসমৃদ্ধ ‘আদম’, ফোক গল্প অবলম্বনের ছবি ‘প্রেম প্রীতির বন্ধন’, ‘কিল হিম’, হিরো আলমের ‘টোকাই’, অপু বিশ^াসের ‘লালশাড়ি’ এবং সর্বশেষ রোমান্টিক-অ্যাকশন হিরো বাপ্পী চৌধুরী অভিনীত ‘শত্রু’র নামও মুক্তির মিছিলে রয়েছে বলে জানা গেছে। এগুলোর মধ্যে ‘লিডারÑ আমিই বাংলাদেশ’, ‘আদম’ কেবল সেন্সর সনদ লাভ করেছে। বাকিগুলো পাইপলাইনে আছে বলে বোর্ডের একটি সূত্র জানায়। প্রসঙ্গত, দুই বছর মেয়াদের জন্য চলচ্চিত্রের ১৯ সংগঠন প্রথম বছর ১০ ও দ্বিতীয় বছর আটটি উপমহাদেশীয় ভাষার সিনেমা আমদানির পক্ষে ঐকমত্য হয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে।