পবিত্র রমজানসহ ছয়টি দিবস উপলক্ষে মোট ১৪ দিন ছুটি থাকবে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আগামী ৭ এপ্রিল থেকে এ ছুটি শুরু হয়ে শেষ হবে ২৬ এপ্রিল। এ ছাড়া মাধ্যমিক স্তরে এই ছুটি চলবে ২৩ মার্চ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত; অর্থাৎ ২৬ দিন ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে দুই মন্ত্রণালয় পৃথক সময়ে ছুটি ঘোষণায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক এবং অভিভাবকরা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অন্তত ৬০ ভাগ অভিভাবকের সন্তান প্রাথমিক, মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করেন। ছুটির সময় ভিন্ন হওয়ায় তাদের পারিবারিক ভ্রমণ, ভ্রাতৃত্বের বন্ধন ও সম্প্রীতিতে বিঘ্ন ঘটবে। এমনকি, বেশ কিছু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শাখা আছে, তাদের পাঠদানে বিঘ্ন ঘটবে এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যে মনোপীড়ার সৃষ্টি হয়। কিছু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত চালু আছে। এসব বিদ্যালয়েও পাঠদানে সমস্যা দেখা দেয়। যেসব অভিভাবকের সন্তান প্রাথমিক ও মাধ্যমিক দুই শাখাতেই পড়ে তাদের যাতায়াত ব্যয় বেড়ে যায়। আবার একটি সন্তান বাড়িতে রেখে অপরকে নিয়ে অভিভাবকদের বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হয়।
তারা মনে করেন, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সঙ্গে মিল রেখে প্রাথমিকের ছুটি নির্ধারণ করা যৌক্তিক হবে।
মাধ্যমিক স্তরের সঙ্গে একই সময়ে প্রাথমিক স্তরেও ছুটি ঘোষণার দাবিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় হয়েছেন শিক্ষকরা। শিক্ষক সংগঠনগুলোও অভিন্ন ছুটি নির্ধারণের দাবি করেছেন। ‘বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষক সমাজ’ নামের একটি সংগঠনও এই দাবিতে শামিল হয়েছে
সংগঠনটির সভাপতি শাহিনুর আল-আমিন ও সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ইলিয়াছ হোসেন জানান, সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অভিন্ন ছুটি নির্ধারণের যৌক্তিকতা তুলে ধরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবকে চিঠি দেয় হয়েছে। চলতি বছর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫৪ দিন ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭৬ দিন ছুটি রয়েছে। চিঠিতে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অভিন্ন ৭৬ দিন ছুটি নির্ধারণের দাবি তোলা হয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা জানান, অভিন্ন ছুটির বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিলে তা বাস্তবায়নের ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ছুটির প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ২০২৩ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছুটির তালিকায় ৭ এপ্রিল থেকে ছুটি শুরু হয়ে চলবে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত। ২৭ এপ্রিল থেকে ক্লাস শুরু হবে। পবিত্র রমজান, ইস্টার সানডে, চৈত্র সংক্রান্তী, বাংলা নববর্ষ, শব-ই-কদর, জুমাতুল বিদা ও ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে এ প্রতিষ্ঠানগুলোতে সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছাড়া ক্লাস বন্ধ থাকবে ১৪ দিন।
অপরদিকে ২০২৩ সালে সরকারি-বেসরকারি হাইস্কুল, নিম্নমাধ্যমিক স্কুলের ছুটির তালিকা অনুযায়ী ছুটি ২৩ মার্চ শুরু হয়ে চলবে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত। শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। এ প্রতিষ্ঠানগুলো ক্লাস শুরু হবে ৩০ এপ্রিল থেকে। পবিত্র রমজান, স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস, ইস্টার সানডে, বৈসাবি, বাংলা নববর্ষ, শবেকদর, জুমাতুল বিদা ও ঈদুল ফিরত উপলক্ষে এ সময়ে সাপ্তাহিক ছুটি ছাড়া ২৬ দিন ক্লাস বন্ধ থাকবে।
সরকারি-বেসরকারি কলেজ, সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা ও টিটি কলেজের ২০২৩ সালের ছুটির তালিকা অনুযায়ী ছুটি ২৩ মার্চ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত। ২০২৩ সালে মাদ্রাসার ছুটির তালিকা অনুযায়ী ২২ মার্চ শুরু হয়ে চলবে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত। একই তারিখে ছুটি থাকবে এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনাল এবং জেএসসি ভোকেশনাল শিক্ষাক্রমের প্রতিষ্ঠানগুলোয়।