ঘোড়ায় চড়ে বিয়ে বাড়িতে বর, হেলিকপ্টারে এমপি

Slider ফুলজান বিবির বাংলা


মতিউর রহমান হালিমের দাদা আহম্মদ হোসেন বিয়ে করতে গিয়েছিলেন ঘোড়ায় চড়ে। আর বউ নিয়ে এসেছিলেন পালকিতে করে। দাদার সেই গল্প শুনে হালিমের ইচ্ছা হয় তিনিও দাদার মতো ভিন্ন আয়োজনে বিয়ে করবেন। ঠিক হয় বিয়ের দিনক্ষণ।

হালিমের ইচ্ছা অনুযায়ী পরিবারও নেয় প্রস্তুতি। কয়েকদিন ধরে বাননো হয় পলকি। আর ভাড়া করা হয় একটি ঘোড়া। দাদার মতো ঘোড়ায় চড়ে বিয়ে করতে যান তিনিও। সঙ্গে নিয়ে যান পালকি। সেই পালকিতে করে নববধূকে বাড়িতে নিয়ে এসেছেন হালিম।

আজ শনিবার রাজশাহীর বাগমারায় ব্যতিক্রমী এ বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে। বর মতিউর রহমানের বাড়ি বাগমারার সোনাডাঙ্গা ইউনিয়নের ভরট্ট গ্রামে। মাদরাসাশিক্ষক আবদুল মান্নান ও স্বাস্থ্যকর্মী হালিমা খাতুনের একমাত্র ছেলে মতিউর। কনে ফারহানা আঁখির বাড়িও একই ইউনিয়নে। তার বাবা আজাহারুল হক সোনাডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।

দুপুর ১২টার দিকে ভরট্ট গ্রাম থেকে ঘোড়ায় চড়ে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে কনের বাড়িতে যান মতিউর। সঙ্গে নেন পালকি ও সহযাত্রীদের। কনের পরিবার থেকে তাদের গ্রামীণ পুরোনো রীতি অনুসারে বরণ করে নেওয়া হয়।

বর ও কনের পারিবারিক সূত্র জানায়, পারিবারিকভাবেই আঁখি ও হালিমের বিয়ে ঠিক হয়। হালিম চীন থেকে পড়াশোনা শেষ করে দেশে এসেছেন। আঁখি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী।

মতিউর রহমানের মা হালিমা খাতুন বলেন, ‘হালিম আমার একমাত্র ছেলে। ছোটবেলায় বাড়ির লোকদের কাছে থেকে শুনেছি তার দাদা ঘোড়ায় চড়ে বিয়ে করতে গিয়েছিলেন। সেই গল্প শুনে ছেলের শখ জাগে সেও দাদার মতো ঘোড়ায় চড়ে বিয়ে করবে। ছেলের শখ মেটাতে ও পরিবারের ঐতিহ্য ফিরে আনতে এ আয়োজন করেছি।’

কনের বাবা ইউপি চেয়ারম্যান আজাহারুল হক বলেন, ‘বরপক্ষের এমন ব্যতিক্রম আয়োজনের বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না। তবে তাদের এ আয়োজন বেশ ভালো লেগেছে।’

এদিকে বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টার নিয়ে আসেন স্থানীয় সংসদ সদস্য এনামুল হক। দুপুর সাড়ে ১২টায় হেলিকপ্টারটি স্থানীয় ফুটবল মাঠে অবতরণ করে। হেলিকপ্টার দেখতেও উৎসুক জনতা ভিড় করেন।

স্থানীয় বাসিন্দা মিলন শেখ বলেন, ‘আগে শুনেছি বিয়ে বাড়িতে পালকি আসতো। এখন বাস্তবে দেখলাম। এ বিয়েতে গ্রামের মানুষ খুব আনন্দ পেয়েছে। এক বিয়েতেই পুরাতন ও নতুন সব কিছুই দেখা মিললো।’

মিলনের পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন জমিলা বিবি। তিনি বলেন, ‘আমার বিয়েতে আমি পালকিতে চড়ে এসেছি। আবার পালকিতে বউ যাবে শুনে অনেক কষ্ট করে হলেও এখানে এসেছি। তবে শুধু পালকি নয়, হেলিকপ্টারও দেখেছি। দেখে ভালো লেগেছে। এমন বিয়ে এ গ্রামে আর হয়নি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *