বগুড়ায় শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে বিসিবির কার্যক্রম পুনর্বহাল ও খেলা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন আলোচিত ইউটিবার আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম। আজ মঙ্গলবার দুপুরে স্টেডিয়াম প্রাঙ্গণে তিনি এই মানববন্ধন করেন।
হিরো আলম বলেন, ‘শহীদ চাঁন্দু স্টেডিয়াম ছিল উত্তরাঞ্চলের গর্ব। ক্রিকেটের নক্ষত্র তৈরির মাঠ। কিন্তু জেলা ক্রীড়া সংস্থার অসহযোগিতার কারণে বিসিবির নেওয়া ভুল সিদ্ধান্তে সব ভেস্তে যেতে বসেছে।’
এই স্টেডিয়াম মুশফিকুর রহিম, শরিফুল ইসলাম, অনূর্ধ্ব ১৯ দলের তামিম, তৌহিদ হৃদয়, খাদিজাতুল কোবরা, শারমিন সুলতানা, ঋতু মনিসহ আরও অনেক নারী ক্রিকেটার তৈরির ক্ষেত্রে অনেক বড় ভূমিকা রেখেছে বলে মানববন্ধনে জানান হিরো আলম।
আলোচিত এই ইউটিবার বলেন, ‘এক শ্রেণির লোক সিন্ডিকেট হয়ে কাজ করছেন। তারা চায় না বগুড়া স্টেডিয়াম থাক। স্টেডিয়ামটি অকার্যকর করে জুয়া, মেলা ও গরুর–ছাগলের হাট বসানোর পাঁয়তারা চলছে।’
জেলা ক্রীড়া সংস্থা একটা শ্রেণির হয়ে কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘একটা শ্রেণি চাচ্ছে না, মাঠটিতে খেলাধুলা হোক। খেলাধুলা যদি হয়, তাহলে তো মাঠটা চাঙা থাকবে। তারা এমন গোপনীয়তার সঙ্গে কাজ করছে, চিঠি দিচ্ছে যাতে এখানে খেলা না হয়। তখন দেখা যাবে বছরের পর বছর মাঠটা পড়ে থাকবে। তখন মাঠ গরু–ছাগলের হাট করার জন্য দেবে, জুয়া খেলার জন্য, মেলা করার জন্য দেবে। তখন একটা শ্রেণির জন্য রোড ক্লিয়ার হয়ে যাবে।’
তবে শ্রেণিটিতে কারা আছেন তা উল্লেখ করেননি হিরো আলম। তিনি আরও বলেন, ‘স্টেডিয়ামের মালপত্র কেন খুলে নেওয়া হবে। স্টেডিয়ামে কী কেউ ভাত–কাপড় চায়? কেন এখানের মালপত্র খুলে নেওয়া লাগবে? এসব খুলে নেওয়ার তো কোনো আইন নাই। ওই শ্রেণিটি বাধ্য করেছে এসব মালামাল খুলে নিয়ে যেতে।’
বিসিবির উদ্দেশে হিরো আলম বলেন, ‘আমাদের যেসব মালপত্র খুলে নেওয়া হয়েছে সেসব মালপত্র আমাদের বুঝিয়ে দেওয়া হোক। এখানে প্রতিবছর বিভিন্ন জেলায় যেমন খেলা হয় আমরাও এই স্টেডিয়ামে সে রকম খেলা দেখতে চাই। ১৫ বছর ধরে বগুড়া স্টেডিয়ামে কোনো আন্তর্জাতিক খেলা নাই, আমরা আন্তর্জাতিক খেলা দেখতে চাই।’
এর আগে গত ২ মার্চ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাছে দেওয়া একটি চিঠিতে বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে মাঠ হস্তান্তরের কথা জানায় বিসিবি। একই সঙ্গে স্টেডিয়ামে থাকা বিসিবির ১৭ জন কর্মচারীসহ সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঢাকায় বদলি করা হয়।
এদিকে ভেন্যু প্রত্যাহার নিয়ে বিসিবি ও জেলা ক্রীড়া সংস্থা একে অপরকে দোষারোপ করছে। মূলত স্টেডিয়াম নিয়ে বিসিবির দ্বন্দ্ব শুরু হয় স্থানীয় জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাসুদার রহমান মিলনের সঙ্গে। সূচি অনুযায়ী, শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে ৮ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত শেখ কামাল জাতীয় যুব ক্রিকেট লিগের খেলা হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু সূচি পূর্বনির্ধারিত হলেও গত ২৮ ফেব্রুয়ারি হঠাৎ বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থা বিসিবিকে একটি চিঠি দেয়। চিঠিতে বিসিবিকে জেলা ক্রীড়া সংস্থা জানায়, ১ মার্চ থেকে স্থানীয় প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ শুরু হবে বলে যুব ক্রিকেটের জন্য মাঠ দেওয়া সম্ভব নয়।
বিসিবি দীর্ঘদিন যাবৎ তাদের জনবল দিয়ে দীর্ঘদিন স্টেডিয়ামকে সচল রেখেছে। পাশাপাশি শেখ কামাল যুব ক্রিকেট টুর্নামেন্ট একটি জাতীয় পর্যায়ের খেলা। সেখানে স্থানীয় জেলা ক্রীড়া সংস্থার ঘরোয়া ক্রিকেট লীগের অজুহাত অনেকটা অপমানজনক হিসেবেই নিয়েছে বিসিবি। এরপরই বগুড়া শহীদ চান্দু ষ্টেডিয়াম থেকে জনবল প্রত্যাহার করা হয়।