রাজধানীর বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের আবাসিক হলের এক শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবা আক্তার সাইমুনের বিরুদ্ধে। তার জন্মদিনে চাঁদা না দেওয়া এবং কেক কাটার সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত না হওয়ায় ওই শিক্ষার্থীকে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ।
গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে কলেজের নতুন হলের (ফাতেমা হল) দ্বিতীয় তলার ২০০৭ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী লাইজু আফরিন কলেজের ইংরেজি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগী লাইজু আফরিন বলেন, ‘আমি হাবিবার জন্মদিনের আয়োজনে চাঁদা (২০ টাকা) দেইনি। কেক কাটার সময় যাইনি। বিষয়টি কেউ একজন ফেসবুকে পোস্ট করেন। ওই পোস্ট নাকি আমরা করিয়েছি, এজন্য আমার ওপর জুলুম করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন- ফুলপরীর পা ধরে ক্ষমা চাইলেন ছাত্রলীগ নেত্রী
দীর্ঘদিন ধরেই রুম দখলের জন্য কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবীবা আক্তার সাইমুন চেষ্টা করে আসছিলেন অভিযোগ করে লাইজু বলেন, ‘এ নিয়ে বেশ কয়েকবার বাদানুবাদও হয়। এসব ঘটনার ধারাবাহিকতায় শনিবার দিনগত রাতে জোর করে তার পছন্দের শিক্ষার্থীদের এই কক্ষে উঠিয়ে দিয়ে অন্যদের কক্ষ পরিবর্তন করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। ভুক্তভোগী ছাত্রী তার কথা মতো কক্ষ পরিবর্তন করতে না চাইলে নির্যাতন করে জোর করে তার বিছানাপত্র ফেলে দেওয়া হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এমন ঘটনায় মানসিকভাবে আমি ভেঙে পড়েছি। বিষয়গুলো আগেই কলেজ প্রশাসনকে জানিয়েছি। যেখানেই কলেজের প্রশাসন রোববার এ বিষয়টি নিয়ে বসবেন তার আগেই তিনি (হাবিবা আক্তার সাইমুন) তার অনুসারীদের দিয়ে জোরপূর্বক এমন কাজ করেছেন। শেষ পর্যন্ত তারা ওই কক্ষটি দখল করেই নিয়েছেন।’
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবা আক্তার সাইমুন বলেন, ‘আমি মেয়েদেরকে (শিক্ষার্থীদের) জোর করে বের করে দিচ্ছি বিষয়টি এমন নয়। তাদের কক্ষ পরিবর্তন করা হচ্ছে প্রশাসনের সিদ্ধান্তে। ’
ভুক্তভোগীরা যে হলে থাকেন সেখানে দ্বিতীয় তলার মেয়েদের সঙ্গে উল্টাপাল্টা ব্যবহার (খারাপ আচরণ) করেন উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘ওইসব বিষয় ভিডিও করে কলেজ প্রশাসনের কাছে ভুক্তভোগীরাই অভিযোগ করেছেন। তাই প্রশাসন থেকেই বলা হয়েছে যেন ওদের সিট পরিবর্তন করা হয়। কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না কেন আমাকে জড়ানো হচ্ছে। আমি তো এটার সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত না।’
আরও পড়ুন- সানজিদাসহ ৫ ছাত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার
কক্ষ পরিবর্তন করতে কলেজ প্রশাসনের সিদ্ধান্ত প্রশাসনের উপস্থিতিতে বাস্তবায়ন করা করা হচ্ছে, নাকি আপনি বের করে দিচ্ছেন- এমন প্রশ্নের উত্তরে হাবিবা আক্তার সাইমুন বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। প্রশাসনের সিদ্ধান্ত তারাই বাস্তবায়ন করছে।’
এ বিষয়ে বেগম বদরুন্নেসা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সাবিকুন্নাহার বলেন, ‘বিষয়টি জেনেছি এবং সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা বিষয়টি দেখব। এ বিষয়ে কলেজ প্রশাসন বসে সিদ্ধান্ত নেবে।