মতিগতি দেখে মনে হচ্ছে সরকার সমস্যা সমাধানের দিকে যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন যুগপৎ আন্দোলনে থাকা ১২ দলীয় জোট। আজ শনিবার রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংক সংলগ্ন সড়কে ১২ দলীয় জোটের উদ্যোগে পদযাত্রা পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জোট নেতারা এ মন্তব্য করেন।
আওয়ামী সন্ত্রাস, সরকারের দমন-পীড়ন ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে, অবৈধ সরকারের পদত্যাগ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দীর মুক্তি এবং নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম কমানোসহ ১০ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে যুগপৎ আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় আজ শনিবার পদযাত্রা কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সভা সমাবেশের মাধ্যমে জনগণের ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষা তুলে ধরছি। সরকারের মতিগতি দেখে মনে হচ্ছে না সরকার সমস্যা সমাধানের দিকে যাচ্ছে। জনগণের ভোটাধিকার আদায়ে বিরোধী দলের আন্দোলনে ভ্রূক্ষেপ না করে ২০১৪ সালের বিনা ভোটের নির্বাচন এবং ২০১৮ সালের জালিয়াতি ভোটের মতো কোনো অসৎ উপায় উদ্ভাবনের নেশায় বিভোর হয়ে আছে। জনগণ সরকারের এই অশুভ চিন্তা ২০২৪ সালে বাস্তবায়ন হতে দেবে না।’
আসন্ন রমজানের আগে এক মাসের ব্যবধানে বিদ্যুতের তিন বার মূল্য বৃদ্ধির ফলে জনজীবনে দুর্বিসহ দুর্ভোগ নেমে আসবে জানিয়ে বক্তারা আরও বলেন, দেশের অবস্থা দিন দিন ভয়ঙ্কর রূপ নিচ্ছে। ১৫০ টাকার বয়লার মুরগি ২৫০ টাকায় উঠেছে, ৯০ টাকা ডজনের ফার্মের মুরগির ডিম ১৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে! দেশে নিরব দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে! সরকার নির্বিকার! গণ হাহাকারের ধ্বনি সরকারের কানে পৌঁছাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে আবারও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি করেছে! দ্রব্যমূল্যের লাগাম টেনে না ধরে আরও মূল্যবৃদ্ধির ব্যবস্থা করে অভাবী মানুষের সঙ্গে নিষ্ঠুর তামাশা করে যাচ্ছে।
যে সরকার জনগণের ন্যায়সংগত অধিকারের দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন বরদাস্ত করতে পারে না, সন্ত্রাসী হামলা মামলা করে আন্দোলনকে বাধা প্রদান করছে সেই সরকার ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করলে কীভাবে বিরোধীদলকে নির্বাচনের মাঠে নির্বিঘ্নে প্রচারণা এবং জনগণকে ভোট দিতে দিয়ে নিজেদের নিশ্চিত পরাজয় মেনে নেবে এটা দেশ দুনিয়ার কোনো মানুষকে বিশ্বাস করানো যাবে না।
দেশনেত্রী খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দীদের মুক্তি দাবি করে নেতারা বলেন, সরকারের অনমনীয় মনোভাব সামগ্রিকভাবে আন্দোলনকে এক দফা সরকার পতনের দাবির দিকে নিয়ে যেতে বাধ্য করছে। জনগণ রাজপথে নেমে সরকারের পতন ঘটিয়ে একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করবে। এমন একটা পরিস্থিতির দিকেই দেশবাসী ও দুনিয়া তাকিয়ে আছে।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির যুগ্ম মহাসচিব আব্দুল্লাহ আল হাসান সাকিবের সঞ্চালনায় পদযাত্রা পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, বাংলাদেশ এলডিপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল গনি, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি) চেয়ারম্যান ক্বারী মুহাম্মদ আবু তাহের, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, ন্যাপ-ভাসানী চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, ইসলামী ঐক্য জোটের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল করিম, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির যুগ্ম মহাসচিব আবু হানিফ, বাংলাদেশ লেবার পার্টির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা তারিকুল ইসলাম।
পদযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবীব লিংকন, বাংলাদেশ জাতীয় দলের মহাসচিব রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলামসহ ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা।