গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ব্যালট পেপার লুট ও ভোটগ্রহণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগে বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেল ও জাতীয় পার্টি সমর্থিত জাতীয় আইনজীবী ফেডারেশনের গোলাপ প্যানেলের প্রার্থীরা ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুন:নির্বাচন দাবি করেছেন।
শুক্রবার বিকালে আইনজীবী সমিতির হলরুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
বৃহস্পতিবার রাতে জাতীয় পার্টি সমর্থিত গোলাপ প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী ম. মনোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম কাজী নির্বাচন বর্জন করে কেন্দ্র ত্যাগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম আওয়ামী লীগ সমর্থিতদের ব্যালট পেপার লুট ও নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে নীল প্যালেনের আইনজীবীদের সান্ত্বনা দিতে আসা বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকার বলেন, হতাশ হবেন না, নিরাশ হবেন না। আমরা তৈরি হচ্ছি, জবাব তাদের দেব ইনশাআল্লাহ।
সংবাদ সম্মেলনে গাজীপুর নির্বাচনের অনিয়ম ও ব্যালট পেপার লুটের নিন্দা জানিয়ে আরও বক্তব্য দেন নীল প্যানেল সমর্থিত সভাপতি পদপ্রার্থী ড. সহিদউজ্জামান, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) নাছির উদ্দিন, সিনিয়র সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান, সহ-সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মাহবুব আলম মোল্যা, ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু তাহের নয়ন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম রণিসহ সব প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী।
সংবাদ সম্মেলনে আইনজীবীরা বলেন, গাজীপুর বারের প্রতিষ্ঠার পর এমন ঘটনা কখনই ঘটেনি। কারণ অতীতে গাজীপুর বারের একটা ঐক্যবদ্ধ ঐতিহ্য ছিল।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা দলের বহিরাগত লোকজন নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করেন। এ সময় বহিরাগতরা নির্বাচন কমিশনের সহায়তায় ১১ ও ১২ নম্বর ব্যালটের দুটি বই (২০০ পাতা) লুট করে নেয়। পরে বাইরে থেকে এসব ব্যালট পেপারে সিল মেরে পুনরায় এসব ব্যালট বাক্সে ঢুকিয়ে দেয়।
দিনব্যাপী ভোটগ্রহণ শেষে সন্ধ্যায় সব বইয়ের মুড়ি পাওয়া গেলেও ১১ এবং ১২ নম্বর বই না থাকায় যথাসময়ে ভোট গণনায় কালক্ষেপণ শুরু করে নির্বাচন কমিশন।
অবশেষে বিএনপি ও জাতীয় পার্টি সমর্থিত প্রার্থী এবং তাদের সমর্থকদের চাপে রাত ১১টার পর ভোট গণনা শুরু করে। শক্রবার জুমার আগে গণনায় ১৮১৩ ভোট কাস্ট দেখিয়ে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সমর্থিত সাদা প্যানলের সভাপতি সম্পাদকসহ ২১ পদ এবং নীল প্যানেল সমর্থিত সহ-সভাপতি পদ বিজয়ী দেখানো হয়।
এদিকে বৃহস্পতিবার নির্বাচনের দিনই জাতীয়তাবাদী আইনজীবী সমর্থিত নীল প্যানেল ও জাতীয় পার্টি সমর্থিত জাতীয় আইনজীবী ফেডারেশন এ নির্বাচন বর্জন করে ফল প্রত্যাখ্যান করে।
অপরদিকে একই দিন ব্যালট পেপার লুট, ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপির দায় এড়াতে ৫ সদস্যের নির্বাচন কমিশনের একজন সদস্য অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান কামাল পদত্যাগ করেন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনে শুধু কারচুপিই হয়নি, মহাকারচুপি হয়েছে। ব্যালট পেপারের বইগুলো প্রধান নির্বাচন কমিশনার নাছির উদ্দিন ফারুক (শিপন) ও আব্দুল আজিজের তত্ত্বাবধানে ছিল। তিনি ব্যালট বইয়ের মুড়ি মিলাতে গিয়ে ১১ ও ১২ নম্বরের দুটি বই খুঁজে পাননি বলে জানান।