আবাসিক হলের কক্ষ দখল নিয়ে ফের সংঘর্ষে জড়িয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় ছাত্রলীগের পাঁচ কর্মী আহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী হলের মাঠে এ সংঘর্ষ হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, বগিভিত্তিক সংগঠন ‘বিজয়’ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কমিটিকে কেন্দ্র করে দুই ভাগে বিভক্ত। একটি ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক মো. ইলিয়াসের পক্ষ, অন্যটি পদবঞ্চিত কর্মীদের পক্ষ। গত ২১ ফেব্রুয়ারি আলাওল হলের ৪২২ নম্বর কক্ষ দখলে রাখা নিয়ে প্রথমবার সংঘর্ষে জড়ায় দুই পক্ষ। এতে অন্তত ২০ জন আহত হন।
অভিযোগ ওঠে, আলাওল হলের ৮-৯টি কক্ষ ভাঙচুর চালিয়ে দুটি ল্যাপটপ, তিনটি মুঠোফোন ও একজনের সার্টিফিকেট নষ্ট করেন মো. ইলিয়াসের অনুসারীরা।
এ ঘটনায় উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলতে থাকে। ক্যাম্পাসে মোতায়েন করা হয় পুলিশ সদস্যদের। দুই দিন ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক থাকলেও আজ সন্ধ্যায় সোহরাওয়ার্দী হলের কক্ষে আবার বিপক্ষের কর্মীদের ওপর আক্রমণ চালান মো. ইলিয়াসের অনুসারীরা। এ সময় হলের অন্তত পাঁচটি কক্ষ ভাঙচুর করা হয়। পরে হলের মাঠে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত পাঁচজন আহত হন।
তবে হলের কক্ষ ভাঙচুরের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ইলিয়াসের অনুসারী চবি ছাত্রলীগে উপনাট্য ও বিতর্ক বিষয়ক সম্পাদক আল আমিন। তিনি বলেন, ‘আমরা রুমের কোনো জিনিসে হাত দেইনি। এসব আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ছড়ানো হচ্ছে।’
ছাত্রলীগের সহসভাপতি নজরুল ইসলাম সবুজ বলেন, ‘ইলিয়াসকে বয়কট করার কারণে আমরা তার চুরির কথা ফাঁস করে দিতে পারি ভেবে সে ভয় পাচ্ছে। তাই আলাওল হল থেকে আমাদের কর্মীদের নামিয়ে দিতে তারা সংঘর্ষ জড়াচ্ছে।’
চবির চিফ মেডিকেল অফিসার আবু তৈয়ব আমাদের সময়কে বলেন, ‘ইটের আঘাত পাওয়া ৫-৬ জন ছাত্র এসেছিলেন চিকিৎসার জন্য। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি নথিভুক্ত করেছি। পরিস্থিতি শান্ত না হওয়া পর্যন্ত পুলিশ পাহারায় থাকবে। আমরাও সজাগ আছি।’
প্রসঙ্গত, চবি ছাত্রলীগের রাজনীতি দুই ভাগে ও ১৩টি উপগ্রুপে বিভক্ত। এর মধ্যে ১১টি সাবেক সিটি মেয়র আজম নাছিরের অনুসারী। বাকি দুটি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী।
বিজয় উপগ্রুপ মহিবুল হাসান চৌধুরীকে অনুসরণ করেন। ছাত্রলীগের কমিটিকে কেন্দ্র করে বিজয় উপগ্রুপের মধ্যে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। একটি ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইলিয়াসের পক্ষে, অন্যটি পদবঞ্চিত কর্মীদের।