মাসুদ রানা সরকার, বগুড়া জেলা প্রতিনিধি:বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় এবার ৯ হাজার ৫১০ মেট্রিক টন মরিচ উৎপাদিত হয়েছে। উৎপাদিত মরিচের মূল্য প্রায় ৫২৫ কোটি টাকা। বগুড়া জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। সম্প্রতি উপজেলার কাজলা, চন্দনবাইশা, বোহাইল ও কামালপুরসহ কয়েকটি ইউনিয়নের চর ঘুরে দেখা গেছে, কৃষক-শ্রমিকরা মরিচের জমি থেকে পাকা মরিচ সংগ্রহ করছেন। বেশির ভাগ চাষি জমি থেকে তোলার পরপরই তা বিক্রি করে দিচ্ছেন পাইকারদের কাছে।
কাজলা চরের মরিচ চাষি আব্দুল জলিল জানান, এবার আবহাওয়া ভালো থাকায় মরিচের উৎপাদন ভালো হয়েছে। প্রতি বিঘায় প্রায় আট মণ শুকনা মরিচ পাওয়া যাচ্ছে। বাজারে প্রতি মণ মরিচ ১৮ হাজার থেকে শুরু করে মানভেদে ২২ হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতি বিঘায় গড়ে ২০ হাজার টাকা গড় মূল্য ধরা হলে এক বিঘা জমি থেকেই এবার পাওয়া যাচ্ছে প্রায় এক লাখ ৬০ হাজার টাকা। বিঘাপ্রতি খরচ পড়েছে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা।
সারিয়াকান্দি বাজারের মরিচের পাইকারি ক্রেতা লুইস তরফদার জানান, সারিয়াকান্দির মরিচের মান ভালো হওয়ায় দেশের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মসলা উৎপাদনকারী কম্পানি সেখান থেকে মরিচ কেনে। এতে বাজারে যেমন কৃষকরা ভালো দাম পাচ্ছে, তেমনি নিম্ন আয়ের মানুষ জমিতে ও চাতালে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে।
সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হালিম জানান, উপজেলার চরাঞ্চলে এ বছর তিন হাজার ১৭০ হেক্টর (প্রতি হেক্টরে সাড়ে সাত বিঘা) জমিতে মরিচ চাষ করা হয়েছে। প্রতি হেক্টরে গড়ে তিন টন শুকনা মরিচ উৎপন্ন হয়েছে। বাজারে কৃষকরা এবার তুলনামূলকভাবে ভালো দাম পাচ্ছেন।
বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মতলুবুর রহমান জানান, এবার বগুড়ায় মরিচ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল সাত হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে। এরই মধ্যে জেলায় পাঁচ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ হয়েছে। অবশিষ্ট জমিতে বর্ষালি জাতের মরিচ চাষ হবে।
কৃষি বিভাগের তথ্যানুযায়ী, জেলায় এ পর্যন্ত মোট পাঁচ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে মরিচ উৎপন্ন হয়েছে ১৬ হাজার ৯৫০ মেট্রিক টন। এর মধ্যে শুধু সারিয়াকান্দি উপজেলায়ই উৎপন্ন হয়েছে ৯ হাজার ৫১০ মেট্রিক টন। বাজারে মরিচের গড় দাম ২০ হাজার টাকা মণ ধরা হলে (প্রতি টন পাঁচ লাখ ৫০ হাজার টাকা) জেলায় উৎপাদিত মরিচের মূল্য দাঁড়ায় ৯৩২ কোটি ২৫ লাখ টাকা। শুধু সারিয়াকান্দিতে উৎপাদিত মরিচের মূল্য দাঁড়ায় ৫২৩ কোটি পাঁচ লাখ টাকা।