মাসুদ রানা বগুড়া, জেলা প্রতিনিধিঃ বগুড়ায় জনপ্রিয়তা পাচ্ছে গাড়ল পালন। গাড়ল ভেড়া বৈশিষ্ট একটি জাত। বর্তমানে এই জাতের পশু পালনে লাভের মুখ দেখছেন উদ্যোক্তারা। এই জাতের পশু পালনে অল্প সময়ের মধ্যেই সফলতা পাওয়া যায় বলে যুবকরা চাকরির পেছনে না ছুটে গাড়ল পালনে আগ্রহী হচ্ছেন।
জানা যায়, গাড়ল ভেড়া জাতিয় একটি প্রাণী। তবে ভেড়া নয়। এর লালন পালনে খরচ অনেক কম। আর খরচের তুলনায় লাভ অনেক বেশি। স্বাদ ও পুষ্টিগুণ বেশি হওয়ায় এর মাংসের চাহিদা ব্যাপক। ভারতের নাগপুর অঞ্চলের ছোট নাগপুরি জাতের ভেড়ার সঙ্গে আমাদের দেশি ভেড়ার ক্রসব্রিড। এই ক্রসব্রিডের নাম গাড়ল। তবে ভেড়া থেকে এটি বেশি বড় হয় এবং এর লেজও লম্বা হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় গত তিন বছরে গাড়লের ৩-৪টি খামার গড়ে উঠেছে। ব্যক্তি উদ্যোগে অনেক গৃহস্থ ও কৃষক গাড়ল পালন করছেন। এটি ভেড়ার একটি জাত। এরা ভেড়ার মতোই নিরীহ ও বোকা। দেখতে ভেড়ার চেয়ে কিছুটা সুন্দর। অনেকটা দুম্বার মতো।
সারিয়াকান্দির খামারি আশরাফ আলী বলেন, আমি গত ৩ বছর আগে আমার ছেলেকে নিয়ে ৪০ শতাংশ জায়গায় গাড়লের খামার গড়ে তুলি। আমরা প্রথমে মেহেরপুর, টাঙ্গাইল জেলা থেকে সংগ্রহ করি। তারপর পালন শুরু করি। এই জাতের পশু সব পরিবেশের সাথেই মানিয়ে চলতে পারে। এর পালন খুবই সহজ। এই জাত কোরবানিও দেওয়া যায়।
তিনি আরো বলেন, গাড়ল সাধারণত কাঁচা ঘাস, গাছের পাতা, বিচুলী, ভূষি, খৈলসহ সব ধরনের খাবার খেয়ে থাকে। এগুলো স্বভাবে শান্তশিষ্ট হলেও পুরুষ কিছুটা রাগি প্রকৃতির। আমরা ৬৫ টি গাড়ল নিয়ে খামার শুরু করেছিলাম। বর্তমানে আমাদের খামারে গাড়লের সংখ্যা ১৫০টি। একটি গাড়লের বাচ্চার দাম ৬-৮ হাজার টাকা। মাদি বিক্রি হয় প্রতিটি ১২-১৩ হাজার টাকায়। গর্ভবতী গাড়লের দাম ১৫-১৬ হাজার টাকা। আমাদের ১ থেকে দেড় হাজার গাড়ল পালনের পরিকল্পনা রয়েছে।
বগুড়া জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. সাইফুল ইসলাম বলেন, গাড়ল ভেড়া জাতিয় একটি জাত। বর্তমানে এর পালন ও চাহিদা দুটোই বৃদ্ধি পাচ্ছে। পালন অনেক সহজ ও খরচ অনেক কম হওয়ায় যুবকরা এই জাতের পশু পালনে ঝুঁকছেন। গাড়লের মাংসে কোলেস্টেরল অনেক কম। সব বয়সী মানুষ এর মাংস খেতে পারে। দিন দিন এর প্রসার বাড়ছে। আশা করছি এই জাতের পশু পালন দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে।