বছরের শুরুতে বলা হয়েছিল চলতি বছরটা আরিফিন শুভর, যার প্রমাণ বছরের দুই মাস না যেতেই দিয়েছেন তিনি। বছরের শুরুতেই ‘ব্ল্যাক ওয়ার’ সিনেমার সিক্স প্যাকের আরিফিন শুভতে মুগ্ধ দর্শক। ১৩ জানুয়ারি মুক্তি পাওয়া সিনেমাটি এখনো চলছে সিনেমা হলে। সেই রেশ না কাটতেই আরেক ১৩ তারিখে আবার হাজির তিনি। ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে চলতি মাসের ১৩ তারিখে মুক্তি পেয়েছে শুভর রোমান্টিক ওয়েব ফিল্ম ‘উনিশ ২০’। এর অপু চরিত্রের মাধ্যমে দীর্ঘ বিরতির পর রোমান্টিক নায়কের দেখা পেল দর্শক। যথারীতি আবার মুগ্ধতা ছড়াচ্ছেন তিনি। এই সিনেমায় আরেক আকর্ষণ আফসান আরা বিন্দুর অভিনয়। তার ফিরে আসা। এই সিনেমার প্রধান আলোচনার বিষয়ই শুভ ও বিন্দু। দীর্ঘ ১৩ বছর পর এই জুটি আবার একসঙ্গে।
আলোচনায় এর নির্মাতা মিজানুর রহমান আরিয়ানও। ‘বড় ছেলে’, ‘ব্যাচ ২৭’, ‘বুকের বা পাশে’, ‘গজদন্তিনী’, ‘২২শে এপ্রিল’, ‘সংসার’-এর মতো বহু দর্শকনন্দিত নাটক নির্মাণ করে তিনি শুরু থেকেই দর্শকপ্রিয়। বছর দেড়েক আগে বন্ধুত্বের গল্পে সাজানো ‘নেটওয়ার্কের বাইরে’ ওয়েব ফিল্ম নির্মাণ করেও বাজিমাত করেন। তিনিই ফিরিয়ে এনেছেন বিন্দুকে। এ বিষয়ে আরিয়ান বলেন, ‘অনেক আগেই ভেবেছিলাম বিন্দুকে নিয়ে কাজ করব। ‘উনিশ ২০’ গল্পটা রেডি করে মনে হয়েছে এই চরিত্রটি বিন্দু করলে ভালো হয়। উনি যে আবার কামব্যাক করবেন, শুরুতে তার এই ইচ্ছে ছিল না। গল্পটি শুনে ওনার মনে হয়েছে এই ধরনের গল্পেই তার কামব্যাক করা উচিত। এর পর শুটিংয়ের আগে ওয়ার্কশপ ও কাজে ফিরে দেখেছি তিনি কাজে প্রচণ্ড আগ্রহী ও সিরিয়াস। উনি কাজটাকে নিজেই নিজের করে নিয়েছেন। পুরোপুরি শিলা চরিত্র হতে বিন্দু অনেক পরিশ্রম করেছেন।’ একই কথা আরিয়ান বলেছেন শুভর ক্ষেত্রে। তিনি বলেন, ‘শুভ ভাই অপু চরিত্রের জন্য যা করণীয় সেভাবেই খেটেছেন। এমনকি কোনো সংলাপও চেঞ্জ করতে হয়নি। এমনও হয়েছে, সবার আগে উনি শুটিংয়ে এসে মেকাপ রুমে ঘুমিয়ে ছিলেন। তার সঙ্গে আমার সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ। শুটিংয়ের আগে সাতদিন ওয়ার্কশপে সময় দিয়েছেন।’
নির্মাতার কথার সতত্যা পওয়া গেছে যারা সিনেমাটি দেখেছেন তাদের কথাতে। প্রায় সবাই বলেছেন এই সিনেমার গল্প অসম্পূর্ণ থেকে যেত এই দুজনার অভিনয় ছাড়া। তাদের জন্যই যেন লেখা হয়েছে গল্প। অপু ও শিলা চরিত্র এই দুজনকে ছাড়া কল্পনা করা অর্থহীন মনে হবে। পর্দায় এই দুজনের রসায়ন চোখের প্রশান্তি এনে দিয়েছে। যদিও শুভর জন্য বিষয়টা সহজ ছিল না। নাবিদ আল শাহরিয়ার থেকে অপু হয়েছেন আরিফিন শুভ। ৩০ দিনের ব্যবধানের অ্যাকশন থেকে রোমান্টিক হিরো বনে যাওয়া প্রসঙ্গে আরিফিন শুভ বলেন, ‘ক্যারিয়ারের শুরু থেকে আমি দর্শকদের নতুন কিছু দেওয়ার চেষ্টা করছি। সেই চেষ্টা এখনো চলছে। নাবিদ আল শাহরিয়ার থেকে অপু সেটাই প্রমাণ করে। মাত্র এক মাসের ব্যবধানে দর্শক আমাকে দুটি ভিন্ন রূপে দেখছে, অ্যাকশন থেকে সরাসরি রোমান্স।’ সিনেমা প্রসঙ্গে শুভ বলেন, ‘সিনেমাটি মন ভালো করার গল্পে নির্মাণ হয়েছে। অনেক দিন ধরে দর্শক চাইছিলেন আমি রোমান্টিক সিনেমা করি। সে কারণে ভালোবাসা দিবসে দর্শকদের মন ভালো করতে এসেছি।’ শুধু এই দুজন নন, অভিনেত্রী তানিয়া আহমেদের অল্প সময়ের উপস্থিতিও মনে ধরেছে দর্শকের। হাসান মাসুদ, শিবলু ছোট ছোট চরিত্রে মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছেন।
ওয়েব সিনেমা ও নাটক দেখে নির্মাতা আরিয়ানের প্রতি দর্শকের চাহিদা বেড়ে গেছে। সবাই চাচ্ছেন তিনি বড় পর্দার জন্য সিনেমা নির্মাণ করুন। আরিয়ান বলেন, ‘প্রথম সিনেমার জন্য আমি প্রস্তুত। আমার গল্প, অভিনয়শিল্পী, প্রযোজক কোনো কিছুর সংকট নেই; ঘোষণা দিচ্ছি না। সুন্দর সময়ের অপেক্ষায় আছি।’