নওগাঁর নিয়ামতপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বর জুড়ে বাহারি ফুল আর সবুজের সমারোহ। ঝকঝকে হাসপাতালটির ভেতরে বিভিন্ন ওয়ার্ডের সামনের বারান্দার টবে এবং ভবনের সামনে শোভা পাচ্ছে বাহারি ফুল, সঙ্গে সৌন্দর্যবর্ধনকারী গাছ।
হাসপাতাল ঢুকলেই প্রধান ফটকের সামনেই চোখে পড়ে ফুলের বাগান। তবে নিয়ামতপুর উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিত্র কিছুদিন আগেও এমন ছিল না।
হাসপাতাল চত্বরে খালি জায়গা পতিত ছিল। ফুলগাছ লাগিয়ে এসব পতিত জায়গা এখন মনোমুগ্ধকর পরিবেশে পরিণত হয়েছে। এ পরিবর্তনের নেপথ্য কারিগর নিয়ামতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাহবুব-উল আলম।
পরিবেশগত উন্নতি ছাড়া স্বাস্থ্য সেবাতে ও উন্নত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। সীমিত সামর্থ্যের মধ্যেই সেবার ক্ষেত্রেও যুগান্তকারী পরিবর্তন এসেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাসিক প্রতিবেদনে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় নিয়ামতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সারা দেশের মধ্যে ত্রিশ স্থানের মধ্যে অবস্থান করে।
জরুরি বিভাগের পাশেই তৈরি করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন বিশ্রামাগার। সেখানে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনেরা বসে থাকেন।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দ্বিতীয়তলায় রয়েছে শিশু কর্নার। বিভিন্ন এলাকা থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর বাচ্চাদের বিনোদনের জন্য নানা বিধ খেলনা দিয়ে সাজানো হয়েছে এই শিশু কর্নার।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সূত্রে জানা যায়, নিয়ামতপুর ৫০ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৫ জন ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও ১১ জন ডাক্তার দিয়ে চলছে চিকিৎসা সেবা। এখনো চারটি পদে কোনো ডাক্তার নেই, পদগুলো ফাঁকা রয়েছে।
মেডিকেল অফিসার প্রণব কুমার সাহা জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন গড়ে ৫০ থেকে ৬০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওষুধ কোম্পানির রিপ্রেজেন্টিভদের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলছে, ভোগান্তিতে রোগী ও স্বজনরা।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী শারমিন আক্তার জানান, এই হাসপাতালে প্রবেশ করলেই হাসপাতালের সৌন্দর্য এবং সুন্দর ব্যবহার, চিকিৎসা সেবা দেখে মন ভরে যায়। হাসপাতালের পরিবেশ ও ফুল-ফলের গাছ দেখে সত্যিই খুব মুগ্ধ হয়েছি। এরকম পরিবেশ দেশের প্রতিটি হাসপাতালে থাকা দরকার।
হাসপাতালের এ পরিবর্তন সম্পর্কে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাহবুব-উল আলম বলেন, ‘খাদ্যমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা সাধন চন্দ্র মজুমদারের নির্দেশনা ও সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করেন। হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে কয়েকটি কক্ষ অচল ছিল। এখন সেগুলো চালু করা হয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা থেকে শুরু করে বাইরের সব দৃশ্যগুলো সর্বস্তরের মানুষের নজর কাড়ে।’
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালে গড়ে প্রতিদিন ৩৫০ থেকে ৪০০ জন রোগীকে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হয়। হাসপাতালে কোম্পানির প্রতিনিধিদের জন্য সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে এখনো কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’