নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের (হুজি) ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি)। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারদের মধ্যে ফখরুল ইসলাম (৫৮) আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেন ও মোল্লা ওমরের সঙ্গে একাধিকবার সাক্ষাৎ করেছেন বলে দাবি করেছে সিটিটিসি।
ফখরুল ছাড়া গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন সাইফুল ইসলাম (২৪), সুরুজ্জামান (৪৫), হাফেজ আবদুল্লাহ আল মামুন (২৩), দীন ইসলাম (২৫) ও মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন (৪৬)।
আজ শনিবার রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলেন এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও সিটিটিসি প্রধান আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তার ফখরুল ইসলাম হুজির সক্রিয় সদস্য। ১৯৮৮ সালে তিনি গাজীপুরের টঙ্গী তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসায় দারোয়ানের চাকরি করতেন। পরে ওই বছরই তিনি পাকিস্তানের করাচি যান। সেখানে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মুফতি জাকির হোসেনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়।’
সিটিটিসি প্রধান বলেন, ‘জাকির পাকিস্তানে আল-কায়েদার সামরিক কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। তিনি জিহাদের দাওয়াত দিলে ফখরুল তা গ্রহণ করেন। পরে ফখরুল জিহাদি প্রশিক্ষণ নিতে পাকিস্তান থেকে আফগানিস্তানে যান। বিভিন্ন অস্ত্র প্রশিক্ষণের পাশাপাশি অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র- একে ৪৭, এলএমজি ও রকেট লঞ্চার চালানো শেখেন ফখরুল। এমনকি তিনি আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেন ও মোল্লা ওমরের সঙ্গে একাধিকবার সাক্ষাৎ করেন।’
আছাদুজ্জামান বলেন, ফখরুল আফগানিস্তানে বিভিন্ন মেয়াদে জিহাদি প্রশিক্ষণ নিয়ে আবার করাচিতে ফিরে যান। এরপর সেখান থেকে ইরানে যান। ১৯৯৮ সালে তিনি দেশে ফিরে আসেন।
সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসি জানায়, হুজির শীর্ষ নেতা মুফতি হান্নানসহ একাধিক শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তি গ্রেপ্তার হওয়ায় সংগঠনটি নেতৃত্বশূন্য হয়ে যায়। এরই ধারাবাহিকতায় দেশে এসে ফখরুল ইসলাম জঙ্গি কার্যক্রম চালিয়ে নিতে নতুন সদস্য সংগ্রহের চেষ্টা করেন। সশরীর ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে সাংগঠনিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন। যেকোনো সময় দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে বড় ধরনের জঙ্গি হামলা পরিচালনার বিষয়ে তারা নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করতেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, হুজি সদস্যদের বান্দরবান পাহাড়ি এলাকায় প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়ে পরিকল্পনা হয়। ফখরুল ও তার ছেলে সাইফুল ইসলাম (২৪) অন্য হুজি সদস্যদের নিয়ে একাধিকবার কক্সবাজারে অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যান। রোহিঙ্গাদের হুজিতে যোগদান এবং জিহাদি কার্যক্রমের অংশ নিতে অনুপ্রাণিত করার উদ্দেশ্যে তাদের বিভিন্ন সময় মোটা অঙ্কের অর্থ অনুদান দেন তারা। গ্রেপ্তার অন্য সদস্য হাফেজ আবদুল্লাহ আল মামুন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছদ্মনামে বিভিন্ন গ্রুপ পরিচালনা করেন।