আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘আমাদের কোনো লক্ষ্য ছিল না। কোথায় যাব সে সম্পর্কে আমরা জানতামও না। কোনো প্ল্যানিং ছিল না। আমরা নিজেদের মনে করতাম ভিক্ষুক’।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানী আগারগাঁও বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত ‘নিরাপদ ডিজিটাল সমাজ: রাষ্ট্রের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে এ কথা বলেন আইনমন্ত্রী। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিজিডি ই-গভ সিআইআরটির প্রকল্প পরিচালক তারেক এম বরকতউল্লাহ।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘একটা সময় আমাদের সরকার বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত দুর্ভাবনায় থাকত। আমাদের যে আগামী বছরের বাজেট হবে, সেজন্য (কোন দেশ) কে কত টাকা ভিক্ষা দেবে, এ ভিক্ষা আনার পরে, ঠিক করতাম ভিক্ষা কিভাবে খরচ করব’।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেখেছি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যখন সেবামূলক সরকার গঠন করলেন। তিনি একটি নির্দেশনাও দিয়েছিলেন। তিনি লক্ষ্য সেট করেছেন ২০২১, ২০৩১, ২০৪১ সাল পর্যন্ত। এ লক্ষ্যগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে ডিজিটাইজেশন।’
তিনি বলেন, ‘ডিজিটাইজেশন যখন শুরু হলো তখন সরকার চেষ্টা করল দেশের উন্নয়ন ও জনগণের জীবনের মান উন্নয়নের জন্য ব্যবহার করা। তখন এর পাশাপাশি অনেকে ভাবলেন এটাকে ব্যবহার করে নিজে অপরাধ করে কিভাবে লাভবান হওয়া যায়। তখনই অধিকার সুরক্ষার ও অপব্যবহার বন্ধ করার জন্য আইন প্রণয়নের প্রশ্ন ওঠে।’
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের কথা তুলে ধরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘ডিজিটাল আইন কেন করা হয়েছিল আমরা সেই কথাগুলো বলি না। আমরা শুধু বলি ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাক্-স্বাধীনতা হরণ করার জন্য করা হয়েছে। বলা হয়, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করার জন্য করা হয়েছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন প্রয়োজনীয় নয় কি? আইন হলে এটার কিন্তু অপব্যবহার হয়, এটাও স্বাভাবিক।’
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘১৮৬০ সালে পেনাল কোড হয়েছিল। ওইখানে ৩৭৯ ধারা আছে। যেটাকে বলা হয় চুরির ধারা। চুরি করলে তিন বছরের জেল। ১৮৬০ সালে জেল দেওয়া হয়েছিল। আমরা কি চুরি বন্ধ করতে পেরেছি? তাই বলে কি অপরাধ বন্ধ করার জন্য সরকার সচেষ্ট হবে না?’
ডেটা প্রটেকশন আইন প্রণয়নের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অপরাধীরা পুলিশের থেকে এক ধাপ এগিয়ে থাকার চেষ্টা করেন। পুলিশ আর আইন যারা তৈরি করেন তারা অপরাধীদের থেকে দুই ধাপ এগিয়ে থাকার চেষ্টা করছেন। এটাই স্বাভাবিক। আমরা (সরকার) এ চেষ্টা করছি। আগে যখন আইন করা হতো কারও সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করা হতো না। এখন স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়। আমরা স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেই ডেটা প্রটেকশন অ্যাক্ট করব।’
সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান, বিটিআরসির কমিশনার আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন ও পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার নাজমুল হোসেন।