নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় অনেক দিন পর রাতে ভালোভাবে ঘুমাতে পেরেছেন বলে জানিয়েছেন দেশটির বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন (৪২)। পদত্যাগের সিদ্ধান্ত জানানোর এক দিন পর আজ শুক্রবার নর্থ আইল্যান্ডের নাপিয়ের শহরে বিমানবন্দরের বাইরে লেবার পার্টির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন জেসিন্ডা; সে সময় তিনি এ কথা জানান।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জেসিন্ডা বলেন, তিনি ভবিষ্যতে পরিবারকে বেশি সময় দিতে চান। পরের বছর তার মেয়ে স্কুলে যাবে। তিনি মেয়ের সঙ্গে থাকতে চান।
পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পেছনে নারীবিদ্বেষের কোনো ভূমিকা ছিল না উল্লেখ করে জেসিন্ডা বলেন, নেতৃত্বে থাকা নারী ও ভবিষ্যতে নেতৃত্ব দিতে চান এমন মেয়েদের জন্য তার বার্তা রয়েছে। সেটা হলো, ‘আপনার পরিবার থাকতে পারে, আপনি তাতে নানা দায়িত্বে থাকতে পারেন। আপনি নিজস্ব ধরনে নেতৃত্ব দিতে পারেন।’
দুঃখের সময় পার হয়ে এখন স্বস্তি অনুভব করছেন বলে জানান জেসিন্ডা। তিনি বলেন, নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়ার জন্য তার কোনো অনুতাপ নেই। তবে পদত্যাগ করার সিদ্ধান্তে তার সমর্থক ও সমালোচনাকারীরা শোকাহত হয়েছেন। খবর বিবিসির।
আগামী ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন জেসিন্ডা। আগামী রোববার নেতা নির্বাচনের জন্য ভোটাভুটিতে অংশ নেবে লেবার পার্টির পার্লামেন্ট সদস্যরা। যদি কোনো প্রার্থী দলের দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থন না পান, তাহলে লেবার পার্টিতে বড় পরিসরে ভোটাভুটি হবে।
এদিকে জরিপ বলছে, আগামী অক্টোবর মাসে পুনর্নির্বাচিত হতে জেসিন্ডার দলকে কঠিন পথ পাড়ি দিতে হবে। তবে জেসিন্ডা বলেন, তিনি তার উত্তরসূরি হিসেবে প্রকাশ্যে কোনো প্রার্থীকে সমর্থন দেবেন না।
২০১৭ সালে ৩৭ বছর বয়সে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ নারী সরকারপ্রধান হয়েছিলেন জেসিন্ডা। এর এক বছর পর তিনি দ্বিতীয় বিশ্বনেতা হন যিনি অফিসে থাকাকালীন সন্তান জন্ম দেন। করোনা মহামারি, ক্রাইস্টচার্চ ট্রাজেডি এবং হোয়াইট আইল্যান্ড আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের মতো কঠিন পরিস্থিতি সামলে নিউজিল্যান্ডকে নেতৃত্ব দিয়েছেন জেসিন্ডা।
তবে মতামত জরিপ অনুসারে, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে অভ্যন্তরীণ জনপ্রিয়তা কমে গেছে জেসিন্ডার। গত বৃহস্পতিবার পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেছেন, নতুন চ্যালেঞ্জের জন্য আমাদের নতুন কাঁধের দরকার।