গতানুগতিক ধারায় চলছে ১৪ দল

রাজনীতি

14dol_sm_330280674ঢাকা: গতানুগতিক ভাবে চলছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল। কেন্দ্রীয়ভাবে এ জোটের তৎপরতা দৃশ্যমান হলে দেশব্যাপী কোনো কার্যক্রম নেই। এ ব্যাপারে জোটের বৈঠকে বার বার সিদ্ধান্ত হলেও তার কোনো বাস্তবায়ন হয়নি।

১৪ দলের জোটে অন্তর্ভূক্ত শরিক দলগুলোর নেতাদের অভিযোগ, সারাদেশে জোটগত কার্যক্রমের মাধ্যমে জোটের রাজনৈতিক ভীতকে শক্ত করার কথা বাব বার বলা হয়েছে। কিন্তু এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। আর এজন্য ১৪ দলের প্রধান শরিক আওয়ামী লীগকে দায়ী করছেন জোটের শরিক দলগুলোর নেতারা।

শরিক দলগুলোর নেতারা জানান, ১৪ দলের শরিকদের দীর্ঘ দিনের দাবি রয়েছে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে জোটের কার্যক্রম ও রাজনৈতিক তৎপরতাকে সম্প্রসারিত করা। অনেক বারই জোটের বৈঠকে শরিকদের পক্ষ থেকে এ বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এর সঙ্গে একমত পোষণ করে বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে বার বার আলোচনাও হয়েছে। এমনকি এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার কথাও জোটের বৈঠকে বলা হয়েছে। কিন্তু এটি আলোচনা ও সিদ্ধান্তের মধ্যেই রয়ে গেছে বলে শরিক দলগুলোর নেতাদের অভিযোগ।

১৪ দলের শরিক দলগুলোর একাধিক নেতা বলেন, বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনের চাপ এই মুহুর্তে সরকারের উপর নেই। তাদের সন্ত্রাসী তৎপরতা হয়তো প্রশাসন দিয়ে সরকার মোকাবিলা করেছে। তবে আগামীতে বিরোধী পক্ষের রাজনৈতিক চাপের মুখোমুখি হতে হবে না এটা জোর দিয়ে বলা যায় না। যে কোনো চাপ মোকাবিলায় সরকারের পাশপাশি রাজনৈতিক প্রতিরোধও জরুরি। সেটার জন্য সারা দেশে জোটের শক্ত ভিত্তি গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই। ১৪ দলের বৈঠকে এ বিষয়টি বার বার তুলে ধরা হয়েছে।

এদিকে গত জানুয়ারিতে বিএনপির আন্দোলন চলাকালে ১৪ দলের এক সভায় জেলা-উপজেলা পর্যায়ে জোটের কার্যক্রম নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সেই সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সারা দেশে জেলা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটিতে এ জোটের শরিকদলগুলোর নেতাদেরকে সম্পৃক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশ পাঠানোর জন্য সভায় উপস্থিত স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রীকে আহ্বান জানানো হয়। এ সিদ্ধান্তটিও বাস্তবায়ন হয়নি বলে ১৪ দল নেতাদের অভিযোগ।

১৪ দলের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে জোটের অন্যতম শরিক জাসদের সাধারণ সম্পাদক শরিফ নুরুল আম্বিয়া বাংলানিউজকে বলেন, আওয়ামী লীগ যখন মনে করে তখন ১৪ দলের বৈঠক ডাকে। জেলা পর্যায়ে ১৪ দলের কার্যক্রম সেভাবে নেই। জোটকে স্বক্রিয় করার তেমন উদ্যোগও নেই। জেলা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটিতে ১৪ দলের শরিক দলগুলোর নেতাদের অন্তুর্ভূক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছিলো কিন্তু সেটাও আগায়নি। হয় তো মনে করা হচ্ছে আন্দোলন নেই। এভাবেই ১৪ দল চলছে।

এ বিষয়ে জোটের ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এনামুল হক  বলেন, ১৪ দলের বৈঠকে জোটের কার্যক্রমকে তৃণমূল পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার কথা আমরা অনেকবার বলেছি। অনেক সিদ্ধান্ত হয়েছে কিন্তু তার কোনো বাস্তবায়ন আমরা দেখিনি। সর্বশেষ বিএনপির আন্দোলনের সময় জেলা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটিতে ১৪ দলের শরিক দলগুলোর নেতাদের রাখা এবং জেলা উপজেলায় সন্ত্রাস বিরোধী প্রতিরোধ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছিলো। কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয়নি।

জোটের অন্যতম শরিক দল ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য আনিসুল রহমান মল্লিক  বলেন, জেলা পর্যায়ে ১৪ দলের তৎপরতা নেই। এই জোটকে আমরা জেলা, উপজেলা পর্যায়ে স্বক্রিয় করে তৎপর রাখার প্রস্তাব বারবারই করে এসেছি। সন্ত্রাসী তৎপরতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছিলো। কিন্তু কোনোটিই হয়নি। আওয়ামী লীগ হয়তো প্রয়োজন মনে করছে না।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে জোটের আরেক শরিক গণতন্ত্রী পাটির প্রেসিডিয়াম সদস্য নুরুর রহমান সেলিম  বলেন, কেন্দ্রেই ১৪ দল দৃশ্যমান। মাঝে মাঝে আমরা সভা করি। কেন্দ্রের বাইরে জেলা পর্যায়ে এ জোটের কার্যক্রম নেই। তবে আমরা অনেকবার জোটগতভাবে জেলা পর্যায়ে কার্যক্রম চালানোর প্রস্তাব করেছি কিন্তু আওয়ামী লীগ থেকে উদ্যোগ না নেওয়ায় সেটা সম্ভব হচ্ছে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *