বিএনপি-জামায়াত সরকারের সেই পাঁচ বছর (২০০১ থেকে ২০০৬) দেশের ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায় ছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের বর্তমান মেয়াদের চার বছরপূর্তি উপলক্ষে তিনি এই ভাষণ দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের ওই পাঁচ বছরে সারাদেশে হত্যা-গুম, ধর্ষণ, লুটপাট, সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়ানো হয়। জঙ্গিবাদ ও অপশাসনে তারা যে মাইলফলক স্থাপন করেছিল, তা দেশের মানুষ আগে কখনও দেখেনি। ওই সময় শুধু আওয়ামী লীগেরই হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়।
তিনি বলেন, ২০০৯ সালে আমরা যখন সরকার পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করি, তখনও বিশ্বব্যাপী মন্দাবস্থা চলছিল। চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম ছিল আকাশচুম্বী। অপরদিকে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ছিল নিম্নমুখী। বিদ্যুতের অভাবে দিনের পর দিন লোডশেডিং চলতো। গ্যাসের অভাবে শিল্পকারখানার মালিকেরা যেমন হাহাকার করতো, তেমনই চুলা জ্বলতো না মানুষের বাড়িতে। সারসহ কৃষি উপকরণের উচ্চমূল্য এবং জ্বালানি তেলের অভাবে কৃষকের নাভিশ্বাস উঠেছিল। এমনই এক অর্থনৈতিক দূরবস্থার মধ্যে আমরা সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নেই।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আজ দেশের শতভাগ মানুষ বিদ্যুতের আওতায় এসেছে। নিজস্ব গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি বর্ধিত চাহিদা মেটানোর জন্য আমরা এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করে এলএনজি আমদানির ব্যবস্থা নিয়েছি। প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত আজ মধ্যবিত্ত-নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারে গ্যাসের চূলায় রান্না হয়।
সরকারপ্রধান বলেন, রূপকল্প ২০২১-এ আমরা অন্যান্য লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পাশাপাশি ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলাম। আজকে সন্তুষ্টচিত্তে বলতে পারি, আমরা সে প্রতিশ্রুতি পূরণে সক্ষম হয়েছি। আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বিশ্বের মানচিত্রে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।
প্রধানমন্ত্রীর এই ভাষণ বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার, বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল, বিভিন্ন রেডিও স্টেশন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় লাভ করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এরপর ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা চতুর্থবার ও টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন।