জাতীয় পার্টির (জাপা) ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশে এক মঞ্চে পাশাপাশি চেয়ারে বসেছেন দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের এবং চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলে জাপার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
জাতীয় পার্টিতে গত তিন মাস ধরে চলা দ্বন্দ্বের মধ্যে দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে রওশন এরশাদ ও জি এম কাদেরের এক মঞ্চে থাকার বিষয়টিকে ‘ঐক্যের বার্তা’ হিসেবে দেখছেন নেতাকর্মীরা।
এর আগে আজ সকালে ৯টার দিকে কাকরাইলে কেন্দ্রীয় কার্যালয় চত্বরে জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের নেতৃত্বে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন জ্যেষ্ঠ নেতারা। এ সময় দলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন তারা।
সভাস্থলে উপস্থিত রয়েছেন জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কাজী ফিরোজ রশীদ, এ বি এম রহুল আমিন হাওলাদার, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য সহিদুর রহমান টেপা, সুনীল শুভ রায়, সদস্য আলমগীর সিকদার লোটন, সাইফুউদ্দিন আহম্মেদ মিলন, রংপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য রাহগির আল মাহি সাদকে এরশাদ প্রমুখ।
জানা যায়, জাপার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানাতে গত ২৫ ডিসেম্বর দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুকে সঙ্গে নিয়ে রওশনের গুলশানের বাসায় যান জি এম কাদের। ওই দিন রওশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে মুজিবুল হক চুন্নু গণমাধ্যমকে বলেনন, ‘রওশন এরশাদ আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাপার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত আলোচনা সভায় রওশন এরশাদ উপস্থিত থাকবেন।’
জাপার চেয়ারম্যান হিসেবে দলীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণে গত ১ নভেম্বর থেকে আদালতের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রয়েছেন জি এম কাদের। এ কারণে গত দুই মাস ধরে তিনি চুপচাপ রয়েছেন, দলীয় কোনো সভা-সমাবেশেও যাননি, কার্যত তিনি রাজনীতিরই বাইরে রয়েছেন। দুই মাস পর আজই প্রথমবার দলীয় কোনো অনুষ্ঠানে উপস্থিত রয়েছেন তিনি।
জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে এলেও আইনগত জটিলতার জন্য সভাপতিত্ব করছেন না জি এম কাদের। তাই অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করছেন দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুনু।
২০১৯ সালে এরশাদের মৃত্যুর পর দলীয় কোনো অনুষ্ঠানে প্রথমবারের মতো একমঞ্চে উপস্থিত থাকছেন রওশন ও জি এম কাদের। এর মধ্যে অবশ্য থাইল্যান্ডের ব্যাংককে চিকিত্সা শেষে গত ২৭ নভেম্বর রওশন এরশাদ দেশে ফেরার পর তার সঙ্গে গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেলে গিয়ে বৈঠক করেছেন জি এম কাদের। এরপর রওশনের সঙ্গে গণভবনে গিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও বৈঠক করেন।