ঢাকা: ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব উড়োজাহাজ ‘রাজদূত’ রোববার (০৭ জুন) রাত ৮টা ২০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেছেন।
একাত্তরে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষের সমর্থনে নিজ গ্রাম থেকে একটি মিছিল নিয়ে সুদূর নয়াদিল্লি এসেছিলেন।
ঢাকা সফরের দ্বিতীয়দিনে এ কথা নিজেই জানালেন মুক্তিযুদ্ধে সমর্থনকারী বিদেশি বন্ধু ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়িকে দেওয়া মুক্তিযুদ্ধের সম্মাননা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
সফরের শেষ কর্মসূচি রাতে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দে রাতে উন্মুক্ত বক্তৃতা অনুষ্ঠানেও মোদি একই কথা জানান।
দুইদিনের সরকারি সফর শেষে নয়াদিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
তাকে বহনকারী ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব উড়োজাহাজ ‘রাজদূত’ রোববার (০৭ জুন) রাত ৮টা ২০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।
এক্ষেত্রে বলাই যায়, নরেন্দ্র মোদির জন্য মুক্তিযুদ্ধে সম্মাননা পাওনা রইল। তাই বলি বিদায় মুক্তিযুদ্ধ বন্ধু মোদি। তোমার এ সমর্থন আমরা সবসময় মনে রাখবো…।
বিমানবন্দরে ভিভিআইপি টার্মিনালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বিদায় জানান।
এর আগে শনিবার (০৬ জুন) সকাল সোয়া ১০টার কিছু আগে দুইদিনের সফরে ঢাকায় আসেন নরেন্দ্র মোদি। এসময় বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিমানবন্দরে লালগালিচা সংবর্ধনা ও গার্ড অব অনারের পর তিনি সরাসরি যান সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে। সেখানে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো শেষে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শনে।
ওইদিন দুপুরে হোটেল সোনারগাঁওয়ে তার সঙ্গে বেঠক হয় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এরপর প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গেও বৈঠক করেন তিনি।
মোদির সফরকালে স্থল সীমান্ত চুক্তির (এলবিএ) অনুসমর্থনের দলিল হস্তান্তরসহ ২২টি চুক্তি, সমঝোতা স্মারক ও সম্মতিপত্র সই হয়।
শনিবার রাতে এক অনুষ্ঠানে মোদি বলেন, বাংলাদেশে এটি আমার প্রথম সফর, আমার জন্য বিশেষ এক মুহূর্তও বটে। আমরা শুধু প্রতিবেশীই নই, আমরা দু’টি জাতি, যাদের সম্পর্ক ইতিহাস, ধর্ম, সংস্কৃতি, ভাষা, আত্মীয়তায় এবং আমরা দুই দেশই ক্রিকেট ভালোবাসি।
এদিকে সফরের দ্বিতীয়দিন রোববার (০৭ জুন) সকালে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে দিনশুরু করেন মোদি।
এরপর তিনি ঢাকায় ব্যস্ত সময় পার করেন। দুপুরে হোটেল সোনারগাঁওয়ে বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ বিভিন্ন রাজনীতিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মোদি। আলোচনা হয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও।
ঢাকেশ্বরী মন্দিরের পর নরেন্দ্র মোদি রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন দর্শন করেন। এসময় সেখানে প্রার্থনায়ও অংশ নেন তিনি। রাপরে সবার সঙ্গে ছবিও তোলেন তিনি।
ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনে গিয়ে নরেন্দ্র মোদি সেখানকার কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
হাইকমিশন প্রাঙ্গণে একটি গাছের চারা রোপণ করে নতুন চ্যান্সেরি ভবনের উদ্বোধন করেন মোদি। সেখানে ভারত সরকারের সহায়তায় নির্মিত ছয়টি প্রকল্পেরও উদ্বোধন করেন তিনি।
যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসায় ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে একটি অ্যাম্বুলেন্সও দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে বঙ্গভবনে যান মোদি। সেখানে ফুল দিয়ে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান আবদুল হামিদ।
এসময় রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা অটল বিহারি বাজপেয়ীর স্বাধীনতা সম্মাননাও গ্রহণ করেন নরেন্দ্র মোদি।
পরে সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে উন্মুক্ত বক্তৃতা দেন মোদি। এরপর সেখান থেকেই শাহজালাল বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওয়ানা দেন তিনি।
রাত ৮টা ৪০ মিনিটে তাকে বহনকারী প্লেনটি আকাশে উড়ে।