গাইবান্ধায় উপনির্বাচনেও ভোটগ্রহণে শঙ্কা

Slider জাতীয়


নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেছেন, গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনে আগামী ৪ জানুয়ারির উপনির্বাচনে কারও কোনো গাফিলতি মেনে নেওয়া হবে না। কেউ কোন অনিয়ম বা দুর্নীতি করলে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। গত ১২ অক্টোবরের উপনির্বাচনে যেভাবে কাউকে ছাড় দেওয়া হয়নি, এ উপনির্বাচনেও তাই করা হবে।

বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচন উপলক্ষে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
রাশেদা সুলতানা বলেন, সব পক্ষকে নির্বাচন ব্যবস্থার পরিবেশ তৈরি করতে হবে। যাতে ভোটারদের মাঝে আস্থা তৈরি হয়। এতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। প্রচার ও প্রচারণায় আচরণবিধি মেনে চলতে হবে। আপনাদেরকেও ভোটের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। কেন্দ্রে আসতে ভোটারদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। ভোটারদের ভোট প্রয়োগের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব করতে হবে। কোনো কর্মকর্তার ভুলত্রুটি কমিশন মেনে নেমে না।

তিনি আরও বলেন, এবারও সব কেন্দ্রে ইভিএম ও সিসিটিভি ক্যামেরা থাকবে। সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রয়োজনে আরও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। গত ১২ অক্টোবরের উপনির্বাচনের মত ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে দেওয়া হবে না। এজন্য নির্বাচন কমিশন কঠোর অবস্থানে থাকবে।

প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের শঙ্কা প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার বলেন, বাতিল হওয়া উপনির্বাচনে অনেক প্রিসাইডিং কর্মকর্তার চাকরির সমস্যা হয়েছে। অনেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এজন্য আপনাদের শঙ্কা থাকাটা অমূলক নয়। কিন্তু আপনারা এখন নির্বাচন কমিশনের অধীনে ন্যস্ত। আপনারা সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন। আগে নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে জানবেন। আচরণবিধি ভালো করে পড়বেন। তখন অপরাধীরা আপনাকে ভয় পাবে। আপনারা কাউকে ভয় পাবেন না। আপনাদের ভয়ভীতি লোভ লালসার ঊর্ধ্বে থেকে কাজ করতে হবে। আপনার দক্ষতা বুদ্ধিমত্তা দিয়ে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে হবে। এ থেকে আপনারা এবং আমরা কেউ পালাতে পারব না।

পুলিশের ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত উপনির্বাচনে পাঁচজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এবারও পুলিশকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহমুদ হাসান বলেন, কোন প্রার্থীর মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্যে প্রভাবিত হয়ে ৪ জানুয়ারির নির্বাচনে যাতে বিঘ্ন ঘটানো না হয়, সেজন্য তিনি নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকার অনুরোধ জানান।

জাতীয় পার্টির গোলাম শহীদ বলেন, ১২ অক্টোবরের উপনির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়নি। তাই আমরা চারজন প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেছিলাম। সে কারণে ৪ জানুয়ারির নির্বাচনে জনগণ আস্থা পাচ্ছেন না। আমরা প্রার্থীরা শঙ্কামুক্ত না। নির্বাচন কমিশনার ৪ জানুয়ারির নির্বাচন সুষ্ঠু হবে বলে আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন। সেই আশা নিয়েই আমরা প্রচারণা চালাচ্ছি।

বিকল্পধারার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এ নির্বাচনের দিকে সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলাসহ দেশবাসী তাকিয়ে আছে। তাই সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রশাসনকে নিরপেক্ষ থাকতে হবে। নির্বাচন কমিশনার আমাদেরকে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে আশ্বস্ত করেছেন।

সভায় জেলা প্রশাসক মো. অলিউর রহমানের সভাপতিত্বে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ঢাকা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম, গাইবান্ধার পুলিশ সুপার মো. কামাল হোসেন, রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জিএম সাহাতাব উদ্দিন, স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ মাহবুবর রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *