স্বপ্নের মেট্রোরেল এখন বাস্তবতা। নানা আলোচনা-সমালোচনার পর এটাই এখন গুরুত্বপূর্ণ নগর পরিবহন হতে যাচ্ছে। আজ থেকে রাজধানীর দিয়াবাড়ী থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেলে যাতায়াত করবে মানুষ। যানজটের কারণে রাজধানী থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন এলাকা দিয়াবাড়ী এখন নিমিষের পথমাত্র। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বের কারণেই বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটকালে ‘স্বপ্নের পদ্মা সেতুর’ পর স্বপ্নের মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতা এবং দেশের বিশিষ্টজনেরা বলেন, জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনা একজন সার্থক উন্নয়নের অভিযাত্রী। এর আগে তার হাত ধরে শত সেতু উদ্বোধন, শত মহাসড়ক উদ্বোধন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, কর্ণফুলী ট্যানেলের আংশিক খুলে দেওয়ার মতো ঘটনাও রীতিমতো বিস্ময়কর। এর মধ্য দিয়ে দেশের শক্তি ও সম্ভাবনার বিষয়ে জনগণ আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে।
শিক্ষাবিদ আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক আমাদের সময়কে বলেন, ‘বিশ্বের অর্থনৈতিক সংকটের মাঝে আমরা যে মেরুদণ্ড সোজা করে এগিয়ে যাচ্ছি, এর একটি প্রমাণ মেট্রোরেলের উদ্বোধন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে নানা প্রতিবন্ধকতা আছে। এর মাঝে এ রকম একটা প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, যদিও অনেক বিলম্ব হয়েছে। তার পরও যে হয়েছে সেটি আমাদের জন্য স্বস্তির বিষয়।’ তিনি বলেন, আমি মনে করি আমাদের ঢাকা শহরের যে জনঘনত্ব, যাত্রাপথে যে প্রতিদিন দুর্ভোগ পোহাতে হয়, তা মেট্রোরেলের মধ্য দিয়ে কিছুটা অন্তত কমবে।’
আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, প্রতিকূল পরিবেশে দাঁড়িয়ে নানা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে অবশেষে নির্মিত হলো স্বপ্নের পদ্মা সেতু। এর পর ক্রমান্বয়ে হয়েছে এক একটি মেগা প্রকল্প। যে মানুষটির আত্মবিশ্বাস ও নির্দেশনায় আজকের এই উন্নয়নের অগ্রযাত্রা, তিনি বঙ্গবন্ধকন্যা। দেশে-বিদেশে লাগাতার ষড়যন্ত্র এবং প্রকল্প নিয়ে সন্দেহ ও সমালোচনার মধ্যেই সংবেদনশীল মন নিয়ে স্বপ্নের পথে যাত্রা করেন তিনি। দূরদর্শিতা, দৃঢ়তা ও সততার সংমিশ্রণ থাকলে যে অসাধ্যকে সাধন করা যায়, তার প্রমাণ দিয়েছেন শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে শুধু যোগাযোগ খাতেই অভূতপূর্ব সংযোগ স্থাপন হয়নি, বিশ^বাসীর সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক শক্তি ও সম্ভাবনারও সেতুবন্ধ তৈরি হয়েছে। এই পদ্মা সেতুর পর এখন মেট্রোলের মধ্য তৈরি হলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন অভিযাত্রার আরেক মাইলফলক।
বলা হয়, পদ্মা সেতু কেবলই ইট-পাথরের নির্মিত সেতু নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে লাখো কোটি বাঙালির আবেগ। আমাদের ভালোবাসা, আমাদের গৌরব। দেশের মানুষ সেদিন শক্তি জুগিয়েছিল। কারণ মানুষের শক্তিতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বাস করেন। পদ্মা সেতু উদ্বোধন উদযাপনের বর্ণনা দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী তখন বলেছিলেন, ‘আমরা আজ আমাদের সক্ষমতাকে উদযাপন করছি। আবারও প্রমাণ হয়েছে, বাঙালি জাতি যে কোনো প্রতিকূল পরিবেশে ঘুরে দাঁড়াতে পারে, আমরা পারি। পদ্মা সেতু আমাদের বিজয়ের প্রতীক, উন্নয়নের প্রতীক, ঘুরে দাঁড়ানোর প্রতীক, আমাদের হার না মানার প্রতীক, আমাদের সক্ষমতার প্রতীক।’ বঙ্গবন্ধুকন্যার ভাষায় এই সক্ষমতার ডানায় যুক্ত হতে যাচ্ছে আরেকটি পালক- মেট্রোরেল।
জাতীয় সংসদের হুইপ ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, বিজয়ের মাসে মেট্রোরেলের উদ্বোধন জাতির বিজয়ের আনন্দকে অধিকতর অর্থবহ ও শাণিত করবে। বৈশ্বিক সংকট এবং দেশে দেশদ্রোহীদের পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে মেট্রোরেলের আধুনিক পর্বের যাত্রা শুরু বিশ্বসেরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সাফল্যের মুকুটে নতুন পালক যুক্ত করছে। আজ হতে অর্ধশতাব্দী পূর্বে জাতির পিতা তার ঐতিহাসিক ভাষণে বলেছিলেন, ‘আর দাবায়ে রাখবার পারবা না’। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল, বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ অজস্র উন্নয়ন সেই দাবায়ে রাখতে না পারার এক দীপ্ত উচ্চারণ। স্বপন বলেন, বৈশ্বিক মন্দার মাঝে আমাদের মেগা উন্নয়নগুলো জাতীয় অর্থনীতির শক্তিশালী পিলার হিসেবে আমাদের অর্থনীতিকে সুরক্ষা দেবে, এগিয়ে চলার পথে শক্তি জোগাবে।