রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) শিক্ষক সমিতির সভাপতিসহ আট শিক্ষক কর্মকর্তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে কাফনের কাপড় পাঠানো হয়েছে। হুমকি পাওয়া এসব শিক্ষক কর্মকর্তার মধ্যে তিনজন রুয়েটের শুদ্ধাচার কমিটির সদস্যও রয়েছেন।
বুধবার দুপুরে সাত শিক্ষক কর্মকর্তার প্রত্যেকের নামে বাংলাদেশ পোস্টাল খামের ভেতরে দুই টুকরা করে কাফনের কাপড় পাঠিয়েছে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা।
এ নিয়ে রুয়েটে উত্তেজনার পাশাপাশি আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি মতিহার থানা পুলিশকে অভিযোগ আকারে জানানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
জানা গেছে, গত ৬ ডিসেম্বর রুয়েট শিক্ষক সমিতি ও শুদ্ধাচার কমিটির সদস্যরা কয়েকজন কর্মকর্তাকে নির্ধারিত সময়ে অফিসে হাজির না হওয়া ও প্রায়ই অফিসে অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন। এদের মধ্যে উপ-রেজিস্ট্রার শাহ মো. আলবেরুনী ফারুকও ছিলেন।
এই আলবেরুনী ফারুক ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি। ওই দিন দুপুরে তিনি শুদ্ধাচার কমিটি ও শিক্ষক সমিতির কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রকাশ্যে বাকবিতণ্ডায় জড়ান এবং তাদের দেখে নেবেন বলে হুমকি দিয়েছিলেন। মৃত্যু হুমকি পাওয়া একাধিক শিক্ষক কর্মকর্তার সন্দেহ আলবেরুনী ফারুক ও তার সহযোগীদের কাজ হতে পারে এটি। তবে আলবেরুনী ফারুক এমন অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আজ বুধবার কাফনসহ হত্যার হুমকি আসা চিঠিটি প্রথম পান রুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও শুদ্ধাচার কমিটির প্রধান ড. মো. ফারুক হোসেন। মৃত্যুর হুমকি পাওয়া অন্য শিক্ষক কর্মকর্তারা হলেন- রুয়েট শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি ড. মিয়া মো. জগলুল শাহাদাত, রুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্র কল্যাণ দপ্তরের পরিচালক ড. রবিউল আওয়াল, রেজিস্ট্রার ড. মো. সেলিম হোসেন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. নাজিম উদ্দীন আহমদ, ছাত্র কল্যাণ দপ্তরের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ, সহকারী পরিচালক হারুন অর রশিদ ও সেকশন অফিসার মো. রাইসুল ইসলাম রোজ।
এদিকে কাফনের কাপড়সহ মৃত্যু হুমকি পাওয়া শিক্ষক ও কর্মকর্তারা বুধবার বিকেলে রুয়েটের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ড. সাজ্জাদ হোসেনের সঙ্গে তার দপ্তরে গিয়ে জরুরি বৈঠক করেন। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রুয়েটের পক্ষে রেজিস্ট্রার ড. সেলিম হোসেন, আরএমপির মতিহার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ পাঠিয়েছেন। মতিহার থানা পুলিশ অভিযোগটি সাধারণ ডায়েরি আকারে রেকর্ড করেছেন।
রুয়েটের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ড. সাজ্জাদ হোসেন জানান, আট শিক্ষক কর্মকর্তাকে মৃত্যু হুমকি দিয়ে কাফনের কাপড় পাঠানোর ঘটনায় কর্তৃপক্ষ মতিহার থানায় অভিযোগ করেছেন। পুলিশকে ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনহগত ব্যবস্থা নেওয়াসহ হুমকি পাওয়াদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের অনুরোধ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, তদন্ত করে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।