ষ্টাফ করেসপনডেন্ট
গ্রাম বাংলা নিউজ২৪.কম
গাজীপুর অফিস: জেলা প্রশাসন, ভূমি অফিস, বনবিভাগ, পুলিশ প্রশাসন ও কথিত সাংবাদিক চক্র মিলে তৈরী সংঘবদ্ধ ভূমি দস্যুচক্র বন দখলের উৎসব করছেন। প্রকাশ্যে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনায় হেল্ডিং নম্বর, গ্যাস সংযোগ,ফোনের টাওয়ার ও বিদ্যুতের সুবিধা দেয়ায় সরকারী স্বীকৃতি পেয়ে যাচ্ছে বনখেকোরা।
গাজীপুর জেলার বেশ কিছু জায়গায় স্বরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বসতবাড়ি, মিল কারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ মন্দির সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সয়লাব হয়ে গেছে অবৈধভাবে গড়ে উঠা বনভূমির জায়গা। একদিকে গাছ কাটার ধুম অন্য দিকে বাড়ি নির্মানের হিড়িক।
কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা বিটের অধীন কালামপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সাউথ ইষ্ট কম্পোজিট লিঃ নামক প্রতিষ্ঠানটি বনবিভাগের এক বিঘা জায়গা দখল করে কারখানা সম্প্রসারণ করেছে। কারখানার পূর্বপাশ দিয়ে অসংখ্য গজারী গাছ কাটার চিহৃ এখনো আছে। গাছেন মূলগুলো আকাশ পানে তাকিয়ে আছে। আরো ৩বিঘা জায়গা দখল করার পায়তারা চলছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
একই উপজেলার পূর্বচান্দনার শিয়ালপাড়া(মান্দার টেক) গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, জনৈক আকাশ মিয়া গজারী গাছ কেটে বাড়ি নির্মান কাজ করছেন। বাড়িতে টিনের বেড়ার সাথে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে কালিয়াকৈর পৌরসভার হোল্ডিং নম্বর। গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ আগাম এসে রয়েছে বাড়ির টিনের বেড়ায়। ইট দিয়ে ভবন নির্মান করা শেষ হলে সরকারী স্বীকৃতি পাবে ওই বাড়ি গুলো এমনটিই দাবি করছেন বাড়ির মালিক। বাড়ির মালিক আকাশের দাবি, বনভিভাগের লোকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেই বাড়ি নির্মান করছি। গ্যাস বিদ্যুৎ নিতে সমস্যা হয়নি। তাই আর কোন অসুবিধা হবে না।
রাজেন্দ্রপুর সেনানিবাস এলাকায় ভাওয়াল রেঞ্জের অধীনে স্থানীয় বাড়ৈপাড়া বনবিটের আওতায় ধলিপাড়া রাস্তার উভয় পাশে চলছে বনের গাছ কেটে বাড়ি করার উৎসব। প্রথমে গাছ কেটে ও সাথে সাথে বাড়ির নির্মান করা হচ্ছে। ঘরের পাশাপাশি স্থানীয় নজরুল ইসলাম নামে এক ব্যাক্তি বনের জায়গায় বাংলালিংকের টাওয়ার বসিয়েছেন। বনের জায়গার ভাড়া হিসেবে বাংলালিংক থেকে তিনি মাসে মাসে টাকা নিচ্ছেন। জনৈক উপকারভোগী তাজুল ইসলাম প্লট বিক্রির ঠিকাদারী করছেন। বাংলালিংকের টাওয়ারের পাশাপাশি বনের জায়গায় অবৈধভাবে গড়ে উঠা বাড়ি গুলোতে রাইজার বসিয়েছে তিতাস গ্যাস। বাংলালিংকের টাওয়া লাগানো বাড়িটি তিন তলা পর্যন্ত উঠে গেছে। গ্যাস ু বিদুতের সুবিধা থাকায় বোঝার উপায় নেই যে, বাড়ি গুলো অবৈধ।
দেখা যায়, একই বিটের লোহাকাঠ বাগানের উত্তরে গজারীবন উজার করে প্রায় এক একর জায়গায় আমবাগান করা হয়েছে। তবে এই বাগানের মালিক কে স্থানীয়রা বলতে পারেন না। একই এলাকায় স্থানীয় নাজমা মেম্বার ও অলি মিয়ার বাড়ির আশপাশে প্রায় তিন একর বনভূমি জবর দখল করে ১০/১২টি ঘন নির্মান করা হয়েছে। দখলকৃত জায়গার খালি অংশে আরো ঘর উঠানোর প্রস্তুতি দেখা গেছে।
পিংগাইল গ্রামে গ্রীনটেক মোড় থেকে এক কিঃমিঃ পূর্বে গিয়ে দেখা যায়, গজারী বন কাটার উৎসব চলছে। ইতোমধ্যে দুটি ঘর নির্মান হয়েছে। আরো ঘর উঠছে।
স্থানীয়রা বলছেন, মতি গার্ডেন তৈরী হচ্ছে। মতি গার্ডেনের সঙ্গে রয়েছেন পুলিশের বড় কর্মকর্তা।
গোপন সূত্র বলছে, বনবিভাগের কতিপয় অসৎ কর্মচারীর সঙ্গে যোগশাযশ করে ভূমি দস্যু সিন্ডিকেট বন দখলের উৎসব করছেন। ধারাবাহিক প্রতিবেদনের যে কোন অংশে ভূমিদস্যুদের নাম পরিচয় প্রকাশ করা হবে।