বাংলাদেশে পুনরায় দূতাবাস খোলার ঘোষণা দিয়েছেন দক্ষিণ আমেরিকার দেশ আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সান্তিয়াগো ক্যাফিয়েরো।
রোববার (১১ ডিসেম্বর) দক্ষিণ আটলান্টিকের সংবাদ সংস্থা মেরকোপ্রেসের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
বার্তা সংস্থাটি জানায়, চলমান কাতার ফিফা বিশ্বকাপে লিওনেল মেসি ও আর্জেন্টিনা দলের প্রতি বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য সমর্থন বিবেচনায় নিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে শনিবার এক টুইট বার্তায় আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সান্তিয়াগো ক্যাফিয়েরো বাংলাদেশে দূতাবাস পুনরায় খোলার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন।
স্প্যানিশ ভাষায় ক্যাফিয়েরো টুইট করে জানান, আর্জেন্টিনা বাংলাদেশে ১৯৭৮ সাল থেকে বন্ধ থাকা দূতাবাস পুনরায় খোলার প্রকল্পটি এগিয়ে নেবে। ক্যাফিরো তার টুইটে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেনের সঙ্গে নিজের একটি ছবিও সংযুক্ত করেছেন।
‘আগস্টে আমি পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধ করার চুক্তি নিয়ে দশম পর্যালোচনা সম্মেলনে বাংলাদেশি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল কালাম আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেছি’, বলেন ক্যাফিয়েরো।
একই দিনে পোস্ট করা আরেকটি টুইটে আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালে বাংলাদেশে আর্জেন্টিনার রপ্তানি আয় ছিল মোট ৮৭৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা এ যাবতকালের মধ্যে সর্বোচ্চ।
‘রপ্তানি করা প্রধান পণ্যগুলো হলো সয়াবিন তেল, ময়দা, ভুট্টা ও গম’, যোগ করেন তিনি।
বাংলাদেশে সবসময়ই আর্জেন্টিনার বিপুল ভক্ত-সমর্থক ছিল, কিন্তু এই কাতার বিশ্বকাপের সময় দেশটির প্রতি তাদের প্রবল আবেগ প্রদর্শন বিশ্বব্যাপী নজর কেড়েছে। উচ্ছ্বসিত মেক্সিকোর বিরুদ্ধে মেসির গোলে বাংলাদেশি সমর্থকদের উল্লাস করার একটি ভিডিও ফিফার অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা হয়।
বাংলাদেশ ও আর্জেন্টিনার গল্পটি দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায় এবং ইন্টারনেটে ট্রেন্ডিং হয়। আর্জেন্টিনার মিডিয়াও তা কভার করেছে। পরে আর্জেন্টিনার জাতীয় ফুটবল দলের অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে বলা হয়, আমাদের দলকে সমর্থন করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ! ওরাও আমাদের মতো ক্রেজি!
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের সঙ্গে যোগ দেন আর্জেন্টাইনরা। আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের প্রতি বাংলাদেশের অন্তহীন ভালোবাসার প্রতিদান হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের জন্য একটি আর্জেন্টিনা ফ্যান গ্রুপ তৈরি করা হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাফিয়েরোকে উদ্ধৃত করে মার্কোপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতে অনুষ্ঠিতব্য জি-২০ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণের পর প্রস্তাব চূড়ান্ত করতে তিনি আগামী বছর বাংলাদেশ সফর করবেন।
এ বছরের আগস্টে ক্যাফিয়েরো বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তারা দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা এবং বাণিজ্য বৃদ্ধির ব্যাপক সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করতে সম্মত হন।
বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদন বলছে, আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, তারা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক করতে চায়, প্রধানত বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে এবং বাংলাদেশে একটি দূতাবাস খোলার মাধ্যমে বাণিজ্যে বৈচিত্র্য আনতে চায়।