কুষ্টিয়ায় মহাসড়কে যানবাহন ভাঙচুর ও নাশকতার চেষ্টার অভিযোগে বিশেষ ক্ষমতা আইনে বিএনপি ৫৩ নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। এছাড়াও মিরপুর থানায় ১২ জনের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সোমবার (৫ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে মডেল থানার উপ পরিদর্শক মোহন সাহা বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মিরপুর থানায় পৃথক আরও ১টি মামলা করা হয়েছে। তবে এটিকে হারানিমূলক মামলা বলে অভিযোগ করেছেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন।
সদর থানার মামলায় জেলা বিএনপি কোষাধক্ষ্য জয়নাল আবেদীন প্রধানসহ ১৮ নীতি কর্মীর নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরো ৩০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে তাদের মধ্যে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- কুষ্টিয়া শহরের থানাপাড়া এলাকার মৃত বাদশা আলির ছেলে ও কুষ্টিয়া পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহিন হোসেন (৪৫), খাজানগর আদর্শ পাড়া এলাকার আয়নাল ফকির ছেলে ও সদর উপজেলার স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আনিছুর রহমান (৪৪), হাটশহরিপুর এলাকার আলতাফ হোসেনের ছেলে ও হাটশহরিপুর ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি নেতা আলামিনমালিথাহাবিব (৩২) এবং সন্তোষপুর গোয়ালপাড়া এলাকার মহির উদ্দিনের ছেলে হাবিবুর রহমান হাবিব (২৮) ও হিমেল।
সদর থানার মামলায় এজাহার সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাত ৮টা ৫ মিনিটের দিকে বাদী গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন শহরের নির্মাণাধীন বিআরবি হাসপাতালের সামনে মহাসড়কের ওপর সরকারি সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা, যানবাহন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য বিএনপির ও এর সহযোগী সংগঠনের ৪৫ থেকে ৫০ নেতা কর্মী জড়ো হয়েছে। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে গেলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সেখানে অবস্থানরত বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের উচ্ছৃঙখল নেতাকর্মীরা পালিয়ে যায়। এ সময় চার আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এই সময় তাদের কাছ থেকে পেট্রোল, গ্যাসের লাইট, রোড, ইটের টুকরা ও বাঁশের লাঠি উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশের দাবি, আটক বিএনপির ওই ৫ নেত-কর্মী নাশকতা চালানোর বিষয়টি আদালতের স্বীকার করেছেন। তারা জিজ্ঞাসা বাদে অনেকের নাম বলেছেন। পরে আটক ৪ জন’সহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞত নামা ৩০-৩৫ জনকে আসামি করে মামলা করা করেছে পুলিশ। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- জেলা বিএনপির কোষাধক্ষ্য জয়নাল আবেদীন প্রধান, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন, বিএনপির কর্মী জীবন, আব্দুস সামাদ, যুবদল নেতা মাজদুর রহমান, নাঈমুল ইসলাম, হারুন, কুটি, রাব্বি, মনিরুল ইসলাম, তিতাস, মেহেদী হাসান। এছাড়াও পৃথক মামলায় কুষ্টিয়া মিরপুর ও ইবি থানায় মঙ্গলবার ও বুধবার আরো ৭জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মিরপুর থেকে জামাত শিবির কর্মী আহসান হাবীব লিংকন, বিএনপির আওলাদ হোসেন, আমিরুল ইসলাম সেন্টু ও গোলাম মোস্তাক গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়।
কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন খান বলেন, বিশেষ ক্ষমতা আইন মামলায় ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দায়েরকৃত মামলায় অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
মিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাশেদুল আলম টগর বলেন, মোট ১২ জনের নামে মামলা করা হয়েছে এর মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছি বাকিরা পলাতক রয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য চেষ্টা চলছে।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সোহরাব উদ্দিন বলেন, আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ। এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে গায়েবি মামলা দিয়ে বিএনপি-নেতা কর্মীদের পুলিশ হয়রানি করছে। মিথ্যা মামলায় ১২ কর্মীকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে।