লক্ষ্মীপুর হানাদার মুক্ত দিবস আজ (৪ ডিসেম্বর)। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে আত্মসমর্পণ করে হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা। শত্রুমুক্ত হয় লক্ষ্মীপুর জেলা।
একাত্তরে লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন স্থানে ১৭টি সম্মুখ যুদ্ধ ও ২৯টি দুঃসাহসিক অভিযান চলে। এসব যুদ্ধে ৩৫ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। নারকীয় এসব হত্যাযজ্ঞের নীরব সাক্ষী হয়ে আছে শহরের বাগবাড়ীস্থ গণকবর, মাদাম ব্রিজ, পিয়ারাপুর ব্রিজ ও মজুপুরের কয়েকটি হিন্দু ও মুসলমান বাড়ি।
৭১ সালের ২১মে ভোরে লক্ষ্মীপুর শহরের উত্তর ও দক্ষিণ মজুপুর গ্রামের হিন্দু পাড়ায় ভয়াবহ তাণ্ডব চালায় পাকবাহিনী। বাড়ি-ঘরে আগুন দিয়ে বহু মানুষকে গুলি ও বেওনেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে তারা। এতে প্রায় ৪০ জন নিরস্ত্র মুক্তিকামী বাঙালি শহীদ হন।
একাত্তরের ১ ডিসেম্বর থেকে, প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল হায়দার চৌধুরী এবং সুবেদার আব্দুল মতিনের নেতৃত্বে হানাদার বাহিনীর বিভিন্ন ক্যাম্পে সাঁড়াশি আক্রমণ চালান মুক্তিযোদ্ধারা। অবশেষে ৪ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয় হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা। এদিন পাকিস্তানিরা আত্মসমর্পণ করলেও লক্ষ্মীপুরের রাজাকার কমান্ডার আবদুল হাইয়ের নেতৃত্বে রাতে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। তখন মুক্তিযোদ্ধা আবু সাঈদ মারা যান। আহত হন আরও তিনজন।
জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল সূত্র জানায়, দিবসটি উপলক্ষে প্রতিবছর শহীদদের কবর জিয়ারত ও মোনাজাত, র্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এবারও করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে গণসমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।