পুলিশের গুলিতে ছাত্রদল নেতা নয়ন নিহতের প্রতিবাদে আজ রোববার সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি করবে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। সারাদেশের সব মহানগর, জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে (জেলা পদমর্যাদার সব ইউনিট) এই কর্মসূচি পালন করবে সংগঠনটি। গতকাল শনিবার রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবন ও সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল।
এর আগে আরেক বিবৃতিতে নয়নকে ‘হত্যা’ করা হয়েছে উল্লেখ করে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ ও সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল এ ঘটনায় দায়ীদের বিচার দাবি করেন।
বিবৃতিতে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তারা অভিযোগ করেন, ‘আওয়ামীলীগের আজ্ঞাবহ দলবাজ পুলিশ সদস্যরা নয়নকে গুলি করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
প্রতিবাদে নয়াপল্টনে বিক্ষোভ: ছাত্রদল নেতা নয়ন ‘হত্যার’ প্রতিবাদে গতকাল শনিবার রাতে রাজধানীতে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল বের করে বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের থেকে মিছিল বের করে কাকরাইল মোড় ঘুরে আবারও কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এতে নেতৃত্ব দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এছাড়াও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক রকিবুল ইসলাম রাকিবসহ সংগঠনের কয়েক’শ নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
মহাসচিবের বিবৃতি
এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাধীন বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম নয়ন মিয়াকে গুলিবিদ্ধ করে হত্যা করার পৈশাচিক ঘটনায় গভীর উদ্বেগ, নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং শোক প্রকাশ করে রাতে গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, বলেন, আগামী ২৬ নভেম্বর কুমিল্লা বিভাগীয় বিএনপি’র গণসমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে শনিবার লিফলেট বিতরণের সময় পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। এতে নয়ন গুরুতর আহত হয় এবং পরে মারা যান। অনেক নেতাকর্মী আহত হয়। এ ঘটনাকে ‘পৈশাচিক’ উল্লেখ করে উদ্বেগ ও নিন্দা জানান বিএনপি মহাসচিব।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, বর্তমান নিষ্ঠুর ও গণবিরোধী সরকার ফ্যাসিবাদী কায়দায় বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনসহ বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর দমণ-নিপীড়ণ জারি রেখেছে। নিজেদের একদলীয় দুঃশাসন চিরস্থায়ী করতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে নিজেদের কব্জায় নিয়ে বিরোধী নেতাকর্মীদেরকে গুলি চালিয়ে নির্মমভাবে হত্যা শুরু করেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশ এখন ভয়ঙ্কর ঘাতকদের কবলে। শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালনকালে বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিবর্ষণ ও হত্যার ধারাবাহিকতায় নয়ন মিয়াকে গুলিবিদ্ধ করে হত্যা করা হলো। এভাবে গুলি চালিয়ে পৈশাচিক কায়দায় মানুষ হত্যার মরণখেলায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে কর্তৃত্ববাদী নব্য বাকশালী সরকার। বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণেই আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে হত্যায় উৎসাহী হয়ে উঠেছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, পতনের আগে সরকার মরণকামড় দিচ্ছে। এখন আওয়ামী অবৈধ সরকার জনপদের পর জনপদকে বধ্যভূমি বানিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ এসব হত্যার বিচার করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
তিনি বলেন, সরকার দেশ শাসনে নজীরবিহীন ব্যর্থতা ঢাকতেই এখন ঘাতকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। তবে সরকারের সকল অপকর্ম ও অপশাসনের মূলোৎপাটনে জনগণ সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। মানুষ হত্যার মতো নির্দয় কর্মকান্ড বন্ধসহ জনদাবী মেনে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করলে বর্তমান সরকারকে জনগণের নিকট হিসাব দিতেই হবে।