ইউক্রেনের খেরসনজুড়ে একাধিক অত্যাচারের ঘর তৈরি করেছিল রাশিয়ার সেনাবাহিনী। বিরোধিতা করলেই সেখানে তুলে নিয়ে গিয়ে ভয়াবহ অত্যাচার করা হতো। বহু ব্যক্তির সেখানেই মৃত্যু হয়েছে। ইউক্রেনের প্রশাসনের কাছে সেই ভয়াবহতার কথা বলতে শুরু করেছেন খেরসনের মানুষ। খবর ডয়চে ভেলের।
ইউক্রেনের পার্লামেন্ট কমিশনের মানবাধিকার প্রধান জানিয়েছেন, এত ভয়াবহ কাহিনী তিনি এর আগে শোনেননি। এই পরিমাণ টর্চার চেম্বারও এর আগে দেখেননি তিনি। স্থানীয় মানুষের কাছে তিনি শুনেছেন, প্রতিবাদ করলেই ওই চেম্বারে তুলে নিয়ে যাওয়া হতো। সেখানে ইলেকট্রিক শক দেওয়া হতো। লোহার পাইপ দিয়ে মারা হতো। বহু ব্যক্তি ওই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মারা গেছেন। ৪৫ দিন ধরে টর্চার চেম্বারে আটক এক ব্যক্তি শুনিয়েছেন তার অভিজ্ঞতার কথাও। প্রতিদিন কীভাবে পাশবিক অত্যাচার হতো তাদের উপর, সে কাহিনি বলেছেন তিনি।
গত সপ্তাহেই রাশিয়া ঘোষণা করে যে, তারা খেরসন ছেড়ে চলে যাবে। তার আগে রাশিয়ার সেনা ওই অঞ্চল দখল করে রেখেছিল। খেরসনে গণভোটের ব্যবস্থাও করা হয়েছিল। রাশিয়ার সেনা চলে যাওয়ার পরেই ক্রমশ তাদের ফেলে যাওয়া অত্যাচারের চিহ্ন স্পষ্ট হচ্ছে।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের একাধিক অঞ্চলে বিমান হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, এদিন ফের গ্যাস এবং বিদ্যুতের স্টেশন লক্ষ্য করে বোমা ফেলা হয়েছে। ক্ষতিও হয়েছে যথেষ্ট।
ইউক্রেনের প্রশাসন জানিয়েছে, বৃহস্পতিবারের হামলায় অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়েছে। ১১জন ব্যক্তি আহত। এদের অধিকাংশই বেসামরিক মানুষ বলে জানিয়েছে ইউক্রেন। বিমান হামলার পাশাপাশি এদিন ড্রোনের সাহায্যেও রাশিয়া হামলা করেছে বলে জানিয়েছে ইউক্রেনের সামরিক বিভাগ।
জেলেনস্কির অভিযোগ, অমানবিক কাজ করছে রাশিয়া। তারা ইউক্রেনের বেসামরিক মানুষকে ঠান্ডায় মেরে ফেলার চেষ্টা করছে। সে কারণেই শীতের মুখে বার বার গ্যাস এবং বিদ্যুতের কাঠামোয় হামলা চালানো হচ্ছে। গ্যাস এবং বিদ্যুৎ না থাকলে মানুষ বাড়িতে হিটিং মেশিন চালাতে পারবেন না। ইউক্রেনের ভয়ঙ্কর ঠান্ডায় তারা জমে মরে যাবেন।