কারোনার আগে সংকেত পেলেও আমরা প্রস্তুতি নিতে গরিমসি করেছি। ফলাফল হয়েছে বিপদ। এবার আরো এক সংকেত। অর্থনৈতিক মন্দা বা দূর্ভিক্ষ। দূর্ভিক্ষের সংকেত কোন না কোন ভাবে আমরা পেয়ে গেছি। করোনায় বিধ্বস্থ দেশের মানুষ যখন ঋনে নুয়ে আছে ঠিক তখনি দূর্ভিক্ষের সংকেত জাতির সামনে আঁধারের অমানিশা। এই সময়ে আমাদের রাজনীতি যখন দেশের মানুষের পাশে দাঁড়াবে তখন তা না করে তারা ক্ষমতা নিয়ে কাড়াকাড়ি শুরু করেছে। কেউ ক্ষমতায় থাকবে কেউ যাবে। আমরণ সংগ্রাম যেন থামছেই না। দেশ ও মানুষ বাঁচানোর জন্য রাজনীতি না ক্ষমতার জন্য সেটা এখন স্পষ্ট হয়ে গেছে। এক সময় দেশেপ্রেমে উন্মাদ লোকেরা রাজনীতি করতেন আর এখন ক্ষমতার জন্য উন্মাদেরা রাজনীতি করছেন বলে মনে হচ্ছে। তাই প্রকৃত রাজনীতি এখন ডুমুরের ফুল হয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ সাংবিধানিকভাবে উদার রাজনৈতিক গণতান্ত্রিক দেশ। এখানে রাজনীতি হবে শুধূ মানুষ আর দেশের জন্য। কিন্তু আমাদের রাজনীতি তাদের সংজ্ঞাই পরিবর্তন করতে চলছে। রাজনীতি এখন মানুষ ও দেশের জন্য নয় ক্ষমতার জন্য রাজনীতি। কালো টাকার মালিক হওয়ার জন্য ক্ষমতা জরুরী। নীরিহ সহজ সরল মানুষগুলোকে পিষে রক্ত বের করে পকেটে নিয়ে ঘুরে ও রক্তকে টাকা বানিয়ে বড় লোক হওয়াই এখন রাজনীতি। মানুষ ও দেশ কোথায় যাচ্ছে সেটা নয়, ক্ষমতা কিভাবে ভোগ করা যায় সেটাই মূখ্য বিষয়। এটাকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের রাজনীতি বলে না। এটা ক্ষমতাবিজ্ঞান। দেশ ও মানুষকে পুঁজি করে ক্ষমতা আহরণ করাই ক্ষমতা বিজ্ঞানের কাজ। তাই আজকের দিনে রাজনীতি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আদলে চলছে না ক্ষমতাবিজ্ঞানের নিয়মে চলছে।
আমাদের রাজনৈতিক দলেরা জনগনের ভোট ও ভাতের অধিকারের জন্য সংগ্রাম করে বলে বক্তব্য দিলেও বাস্তবে তা উল্টো। মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার দিতে গিয়ে মানুষটিকেই হারাতে হচ্ছে আমাদের। রাজনীতি মানুষ খুন করছে, রাষ্ট্রপতিও খুন করছে। এমপি মন্ত্রী খুন হচ্ছেন। খুন ছাড়াও গুম শুরু হয়েছে। হঠাৎ কোন নাগরিক নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। কিছু দিনের মধ্যে জীবিত বা মৃত পাওয়া যায় আবার লাশও পাওয়া যায় না। এটা রাজনীতি নয় ক্ষমতাবিজ্ঞানের ক্ষমতানীতি। এই ক্ষমতানীতিকে বিনাশ করতে না পারলে কোন দিন রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত হবে না। তাই দেশ ও মানুষকে আগে দেখে তারপর রাজনীতি করলে ক্ষমতানীতির বিনাশ ঘটবে। না হয় বিপদ আমাদের ছাড়বে না।